১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি বুদ্ধিজীবী হত্যা ইতিহাসের নৃশংসতম ও বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ। মূলত ২৫শে মার্চ রাতে ঢাকায় নিরীহ জনগণের উপর পাকবাহিনীর হামলা থেকেই শুরু হয় বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞ। পাকিস্তানি সেনারা অপারেশন সার্চলাইট শুরু করলে বুদ্ধিজীবীদের খুঁজে বের করে হত্যা করা শুরু করে সেসময় থেকেই।
তবে মূল আঘাতটা আসে বাংলাদেশ যখন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে জয়ের দ্বারপ্রান্তে। হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের ঠিক দুই দিন আগে ৭১ এর ১৪ ডিসেম্বর বীভৎস-নারকীয় হত্যাকাণ্ড ছিল ইতিহাসে এক জঘন্যতম ঘটনা। বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয় অসংখ্য বাঙালি বুদ্ধিজীবীকে।
যুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে এক নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি হানাদারেরা। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর পরিকল্পনায় একশ্রেণির এদেশীয় দালালের সহায়তায় এই হত্যাকাণ্ডের মূল লক্ষ্যে পরিণত হন বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানি, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদগণ।
মুক্তিযুদ্ধে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির উদ্দেশে প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশে পালিত হয় শোকাবহ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার অসংখ্য শহীদ বুদ্ধিজীবীর পরিচয় দূরের কথা, প্রকৃত সংখ্যাই আজ পর্যন্ত নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে নানা কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।