বিপৎসীমার উপরে তিস্তার পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

উজানের ঢলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় গত ২৪ ঘন্টায় তিস্তার পানি ৯০ সেন্টি মিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এই এলাকার তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। 

ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাংয়ের ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে উজানে তিস্তার পানি সমতলে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন জানায়, উজানের পরিস্থিতি জানার পর থেকেই বুধবার (৪ অক্টোবর) থেকেই প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তিস্তার চর ও নিচু এলাকার মানুষকে দ্রুত গবাদি পশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ উঁচু জায়গায় সরে যাওয়ার জন্য মাইকে প্রচারণা শুরু হয়। যা আজ (বৃহস্পতিবার) সকালেও অব্যাহত আছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদগুলো ও মসজিদের মাইক থেকেও বন্যার পূর্বাভাষ ও সতর্ক সংকেত প্রচার করা হয়।

বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোরেই বেলকা ইউনিয়নের তালুক বেলকা, জিগাবাড়ি, পঞ্চানন্দ পলাশতলা, নবাবগঞ্জ, কিশামত সদর, হরিপুরের চর চরিতাবাড়ি, মাদারী পাড়া, পাড়াসাদুয়া, কানিচরিতাবাড়ি, রাঘব কারেন্ট বাজার, কাপাসিয়ার বাদামের চর, কাজিয়ার চর, পোড়ার চর, কেরানীর চর, বাজার চর, মিন্টুর চরসহ চন্ডিপুর ও কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের নিচু এলাকাগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে আতংকিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় মানুষ। এই বন্যায় জমির ফসল, গবাদী পশু ও বসতভিটা ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

কাপাসিয়া ইউনিয়নের বাদামের চরের লাসেন মিয়া বলেন, কয়েক দফা অল্পস্থায়ী বন্যার পর কাল রাত থেকে পানি বাড়তে শুরু করায় ভাঙনও বেড়েছে। সবজি ও ধানের জমি নিয়ে তাদের শংকা বাড়ছে।

বেলকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ মোবাইল ফোনে জানান, মাইকিং করার পর ইতোমধ্যে অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছেন। তবে কেউ কেউ বাড়িতে থেকেই পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছেন। তাছাড়া বসত ভিটা, আসবাব, ধানচাল, গবাদিপশু নিয়ে বারাবার সরে যেতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, সুন্দরগঞ্জের তিস্তা বেষ্টিত ৭ ইউনিয়নবাসীর জন্য ২৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৯০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তা বিপৎসীমার ৩০ সেন্টি মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি আরও বাড়বে।