আন্দোলনের ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন ড. ইউনূস ইস্যুতে আশ্রয় নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ড. জেবউননেছা রচিত ‘বেদনাতুর ১৯৭৫ আগস্টের শহীদদের আলেখ্য’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি অভিযোগ করছে যে- তাদের আন্দোলন ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রসঙ্গ আনা হয়েছে। আমি ইউনূসের প্রতি সম্মান রেখে জানাতে চাই- নোবেল পেলে কেউ কি আইনের ঊর্ধ্বে চলে যায়? তার শ্রমিকদের ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তিনি কি তা দিয়েছেন? বিএনপি আসলে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ইউনূসের আশ্রয় নিয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল জাতিরাষ্ট্রকে হত্যা করা। এ হত্যাকাণ্ড মানব ইতিহাসের জঘন্য হত্যাকাণ্ড। কারবালার প্রান্তরে নারী শিশুদের রেহাই দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বঙ্গবন্ধু পরিবারের নারী’সহ ছোট্ট শিশু রাসেল, সবাইকেই হত্যা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান কখনোই ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেননি। ক্ষমতার রাজনীতি করলে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। এমনকি তাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন আইয়ুব খান, কিন্তু বঙ্গবন্ধু তা প্রত্যাখ্যান করেন। তাকে বলা হয়েছিল, ৬ দফার দুইটি দফা বাদ দিতে। তার বিপরীতে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ৭০ এর নির্বাচনের আগে ৬ দফা ছিল আওয়ামী লীগের। এখন তা জনগণের দফা। বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্রব্যবস্থায় বাঙালিদের মুক্তি নেই। তাই তিনি ৬ দফা প্রণয়ন করেছিলেন। তিনি যখন মনে করলেন ডাক দেওয়া দরকার, তখনই স্বাধীনতার ডাক দিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এখন বড় বড় কথা বলে। রাত-বিরাতে বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। কেউ তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিরপেক্ষ সরকার সমর্থন করেনি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আসছেন, আবার রাশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীও আসছেন আগামীকাল। এতেই প্রমাণিত হয়, বিশ্ব সম্প্রদায় আমাদের সঙ্গে আছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে প্রধান দুই কুশীলব-খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমান। তার প্রমাণ হচ্ছে- ক্ষমতা দখল করার পর তাকে সেনাপতি বানানো। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য, যারা খুনের ওপর দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলেন, তারা এখন রাজনৈতিক দল গঠন করেন এবং ভোটও পান। রাত-বিরাতে বিদেশিদের কাছে ধরনা দেন। অথচ কেউ তাদের তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ফারজানা ইসলাম, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাবির সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক, শিল্পী হাশেম খান প্রমুখ।