নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কুদ্দুস (৭৭) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। আবদুল কুদ্দুস মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম তাঁর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন। জাতীয় সংসদ ভবনে প্রথম জানাজা শেষে তাঁকে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হবে বলে জানান তিনি। সেখানে জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ গুরুদাসপুরে নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। তৃতীয় জানাজা শেষে সেখানেই তাঁকে দাফন করা হবে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুল কুদ্দুস ১৯৪৬ সালের ৩১ অক্টোবর গুরুদাসপুর উপজেলার বিলসা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। গ্রামে স্কুলজীবন শেষে তিনি রাজশাহী কলেজ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনে যোগদানের মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য হয়ে ওঠেন। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত তিনি বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় আবদুল কুদ্দুস রাজশাহীতে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি সংগঠক হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ পর্যন্ত রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত তিনি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত তিনি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
আবদুল কুদ্দুস ১৯৯১ সালে নাটোর-৪ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর মোট সাতবার নৌকার মনোনয়ন পান এবং পাঁচবার নির্বাচিত হন। জাতির জনকের অন্যতম এই সহচর আবদুল কুদ্দুস মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।