বগুড়ার শাহ্ সুলতান কলেজের কর্মচারীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা

বগুড়ার সরকারি শাহ্ সুলতান কলেজের ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এক শিক্ষার্থী। এর আগে শনিবার কলেজের তিন কর্মচারীকে জালিয়াতির অভিযোগে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রোববার দুপুরে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ওই তিনজনকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মামলায় গ্রেফতার তিনজন হলেন শাজাহানপুর উপজেলার লতিফপুর দক্ষিণপাড়ার হারুনুর রশিদ (৪০), বগুড়া সদর উপজেলার জিগাতলার আমিনুর রহমান (৪৫) ও ইসলামপুর হরিগাড়ীর আব্দুল হান্নান (৪৫)। এরা সবাই শাহ্ সুলতান কলেজের অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত।

এ মামলায় অপর এজাহারভুক্ত আসামি শাজাহানপুরের ওমরদীঘি চন্দ্রহাটা গ্রামের কাওছার আলী (২৪)। এছাড়া আরও পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে মামলায়। কাওছার শাহ সুলতান কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি নিজেকে কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী ও অফিস স্টাফ পরিচয় দিতেন।

মামলার বাদী শাজাহানপুরের শ্মশানকান্দী এলাকার রাশাদুল ইসলাম। তাকে এইচএসসিতে ভর্তির কথা বলে ৫০ হাজার টাকা ও মার্কশিট নিয়েছিলেন হারুন।

এজাহার সূত্রে আরও জানা গেছে, এক নম্বর আসামি হারুনের সহায়তায় অন্য আসামিরা রাশাদুল ইসলামের মতো একইভাবে হাবিবা আক্তার ও সাব্বির হোসেনের কাছে ২০ হাজার এবং মিলনের কাছে ১৮ হাজার টাকা নেন। এছাড়া তাদের মার্কশিট, রেজিস্ট্রেশন, প্রশংসাপত্র নিয়ে রাখে হারুন।

এই টাকা নেয়ার পর ভুক্তভোগীদের রোল নম্বর দেয়া হয়। সেই সুবাদে ওই শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা দিয়েছেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য প্রত্যেকের কাছে পাঁচ হাজার টাকা করে আদায় করেছেন অভিযুক্তরা। কিন্তু পরীক্ষার প্রবেশপত্র তারা দিতে পারেননি। প্রবেশপত্র চাইলে বিভিন্ন অজুহাত দেখানো হতো ওই শিক্ষার্থীদের।

পরবর্তীতে গত ১৬ আগস্ট এইচএসসি পরীক্ষার দিনে শিক্ষার্থীরা কলেজে গিয়ে হারুন ও অন্যদের কাছে গিয়ে প্রবেশপত্রের জন্য চাপ দেয়। তখন কলেজের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে তাদেরকে দেয়া রোল নম্বরগুলো ভুয়া। কাগজে তাদের ভর্তির কোনও নথি নেই।  

ঘটনাটি গণমাধ্যমে প্রচারের পর কলেজ কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। তারা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পাশাপাশি রাজশাহী বোর্ড থেকে চার সদস্যের একটি টিম শনিবার কলেজে আসে তদন্তের জন্য। তদন্তের এক পর্যায়ে বিকেলে আমিনুর রহমান ও হারুনকে র‌্যাব আটক করে নিয়ে যায়। আর আব্দুল হান্নানকে আটক করে শাজাহানপুর থানা পুলিশ। পরে রাতে মামলা হলে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, গতকাল রাতে মামলাটি হয়েছে। মামলায় গ্রেফতার তিন আসামিকে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। আর কাওছার নামে একজন পলাতক রয়েছেন।

leave a reply