আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সন্ধ্যায় আলোচনায় বসছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের আজকের এই বৈঠকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলে জানা গেছে। নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে কে কোন দায়িত্ব পালন করবেন, দলের ইশতেহার তৈরিতে কার কী ভূমিকা থাকবে, দলের তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিক অবস্থা কী, এসব নিয়ে আলোচনা হতে পারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের এ বৈঠকে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকটি সন্ধ্যায় গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকেই দলের আগামী রাজনীতি ও নির্বাচনের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির একাধিক সিনিয়র নেতা।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী বৈঠকের জন্য নয়টি এজেন্ডা ঠিক করা হয়েছে। এগুলো হলো- শোক প্রস্তাব, দলের সভাপতি শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন (২৮ সেপ্টেম্বর), শেখ রাসেল দিবস (১৮ অক্টোবর), জেলহত্যা দিবস (৩ নভেম্বর), নূর হোসেন দিবস (১০ নভেম্বর), ডা. মিলন দিবস (২৭ নভেম্বর), সমসাময়িক বিষয় (জাতীয় ও আন্তর্জাতিক), সাংগঠনিক বিষয় ও বিবিধ। এ ছাড়া বৈঠকে একগুচ্ছ নির্বাচনী দিকনির্দেশনা দিতে পারেন দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা।
নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে চলমান রাজনৈতিক ইস্যু, বিরোধী দলগুলোর লাগাতার আন্দোলন মোকাবিলায় করণীয় এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হবে বৈঠকে। এ বৈঠক থেকেই নির্ধারণ হবে নির্বাচনী কৌশল।
আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক মুহূর্ত নিউজকে বলেন, আজকের বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে দলের আট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের দেওয়া রিপোর্টগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হবে। বিশেষ বর্ধিত সভায় যে সমস্যাগুলো তৃণমূলের নেতারা জানিয়েছেন, সেগুলোর বিষয়েও নিদের্শনা দিতে পারেন দলের প্রধান। বিভিন্ন সময় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও নৈতিক স্খলনের কারণে বহিষ্কৃত নেতাদের দলে ফিরিয়ে আনা যায় কি না তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। নানা অভিযোগ থাকলেও দলের জন্য বিভিন্ন সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন অথবা বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে নির্যাতিত হয়েছেন, জেল খেটেছেন তাদের শর্ত দিয়ে ক্ষমা করে পদ-পদবি ফিরিয়ে দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি নির্বাচনী ইশতেহারের কতটুকু অগ্রগতি হলো সে বিষয়টিও আলোচনায় গুরুত্ব পাবে।
সূত্র আরও জানায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক থেকে দলের তৃণমূল নেতাদের জাতীয় নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিতে দিকনির্দেশনা দেবেন দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম গণমাধ্যমকে বলেন, আজকের বৈঠক আমাদের নিয়মিত একটি বৈঠক। এই বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া সামনে নির্বাচন। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের এই কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজ কতদূর, কোনো সংযোজন-বিয়োজন করতে হবে কি না এসব বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।
এদিকে, আওয়ামী লীগের পক্ষে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় এতদিন সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন এইচ টি ইমাম। তার মৃত্যুর পর এখন কার কাঁধে এ দায়িত্ব পড়বে, তা নিয়ে আওয়ামী লীগে নানা ধরনের আলোচনা রয়েছে। সেই বিষয়েও আজকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।