পাবিপ্রবিতে সাংবাদিক পিটিয়েছে ছাত্রলীগ নেতারা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়ায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের সহযোগিতা চাইলেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পক্ষ নিয়ে অসহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় হামলার শিকার হন ওই সাংবাদিক।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল মামুন দৈনিক নয়া শতাব্দীর পাবিপ্রবি প্রতিনিধি এবং পাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক ও পাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের সদস্যরা জানান, সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে মারধর করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ওই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয় পাবিপ্রবি প্রেসক্লাব। এরপর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব দুর্জয় কুমারকে ক্যাফেটেরিয়ায় আটকে রাখে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এমন সংবাদ পেয়ে ক্যাফেটেরিয়ায় যান আব্দুল্লাহ আল মামুন। এসময় মামুনকেও আটকে রেখে প্রেস বিজ্ঞপ্তি ও প্রেসক্লাবের বিষয়ে জানতে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বেধড়ক পেটায় তারা। তাকে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম প্রান্থ, সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদ রানা সরকার, সাবেক প্রচার সম্পাদক ইকরামুল ইসলাম সাগর, তৌফিকুল ইসলাম হৃদয়সহ ২০-২৫ জন নেতকর্মী মিলে পিটিয়ে আহত করে।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সহযোগিতা চাইলে তিনি এসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ ও প্রেসক্লাব নিয়ে সাংবাদিকদের উল্টো নানা প্রশ্ন করেন। পরে প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব দুর্জয় কুমারকে দিয়ে একটি অভিযোগপত্রে জোর করে স্বাক্ষর রেখে তাদের মুক্তি দিলে আহত মামুনকে নিয়ে হাসপাতালে যান তার সহকর্মীরা।

পাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের আহবায়ক উজ্জল কুমার বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। শুধু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বয়ং প্রক্টর যদি তাদের (ছাত্রলীগের) পক্ষ নেয় তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. কামাল হোসেন বলেন, প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব দুর্জয় কুমার আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। এসময় আব্দুল্লাহ আল মামুন আমার কাছে এসে তাকে মারধরের অভিযোগ করেন কিন্তু আমি তাকে বলেছি লিখিত আকারে অভিযোগ দিতে। লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে দেখা হবে। ওইখানে ছাত্র উপদেষ্টাসহ অনেকেই ছিল তাই পক্ষ নেয়ার প্রশ্নই উঠে না। অসহযোগিতার অভিযোগ মিথ্যা।

এ ব্যাপারে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হাফিজা খাতুন বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। আমাদের তো নিরাপত্তা কর্মকর্তা আছে। বললে তারাও দেখবে। তারপরও আমি এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছি।

leave a reply