বাজারে চিনি নিয়ে অস্থিতরতা চলছে। এরমধ্যে সরকারের নির্ধারণ করা মূল্যে বিক্রেতারা চিনি বিক্রি করছেন কি না, তা নজরদারিতে রাখতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশে আয়ুর্বেদিক ওষুধের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও মেডিসিনাল প্ল্যান্টস অ্যান্ড হারবাল প্রোডাক্টস বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল যৌথভাবে এই সেমিনার আয়োজন করে।
সেমিনারে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েই চলেছে, যার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করার জন্য ট্যারিফ কমিশনকে বলা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, দেশে চিনির দামের সাথে আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের কিছুটা পার্থক্য আছে, সেটা সমন্বয় করা হবে।’
সেমিনারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চিনির ওপর যে শুল্কহার নির্ধারণ করেছে সরকার, তা কমানো অথবা ছাড় দেওয়ার বিষয়ে আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ করব। সেটা করা সম্ভব হলে চিনির দাম কিছুটা কমানো যাবে।’
টিপু মুনশি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমার সাথে সাথে দেশের বাজারেও কমানো হয়েছে। সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে রাখার জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো আমদানিনির্ভর পণ্যগুলো আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করে বাজারে বিক্রি করতে হয়।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে চিনি ও ভোজ্যতেলের যে পরিমাণ চাহিদা, তার প্রায় পুরোটাই আমদানিনির্ভর। এ দুটি পণ্যের দাম ওঠানামা করে। তাই আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি পেলে দেশের বাজারেও প্রভাব পড়ে।
সেমিনারে টিপু মুনশি বলেন, ‘আয়ুর্বেদিক ওষুধশিল্প প্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থা, যা মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে এর উন্নয়ন ও বিকাশ হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশগুলো আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিদেশে রপ্তানি করে থাকে। আমরাও দেশে উৎপাদিত আয়ুর্বেদিক ওষুধ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারি। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এই লক্ষ্য পূরণে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সম্ভাবনাময় এ খাতের সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য গবেষণার ক্ষেত্র বাড়াতে হবে। এসব ওষুধের উপকারিতার কথা মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে। মানুষ অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। সে জায়গা থেকে বের হতে আয়ুর্বেদিক ওষুধ অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহারে গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাকীম মো. ইউছুফ হারুন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি অনুষদের ডিন সীতেশ চন্দ্র বাছার।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক বোর্ডের সদস্য আ খ মাহবুবুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন আয়ুর্বেদিক মেডিসিন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মিজানুর রহমান।