ভারতের অপেক্ষা বাড়িয়ে টেস্টের শ্রেষ্ঠত্ব অস্ট্রেলিয়ার

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের পাঁচ দিনেই অস্ট্রেলিয়ার দাপট ছিলো স্পষ্ট। প্রথম ইনিংসে বড় লিড নেয়ার পর রেকর্ড লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিলো ভারতকে। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চাপে পিষ্ট হলো ভারত। ২০১৩ সালের পর থেকে কোন আইসিসি ট্রফি জিততে না পারার আক্ষেপটা দীর্ঘায়িত হলো রোহিত শর্মাদের। ওভালে ভারতকে ২০৯ রানে হারিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের রাজদণ্ড নিজেদের করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এর মাধ্যমে পুরুষদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব ধরনের বৈশ্বিক শিরোপা জয়ের কীর্তিও গড়া হয়ে গেল অজিদের।

শেষ দিন ম্যাচ জিততে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিলো ৭ উইকেট, আর ভারতের ২৮০ রান। চতুর্থ দিনেই তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে থাকা দলটি আশা দেখছিলো ভিরাট কোহলি ও অজিঙ্কা রাহানের ব্যাটে। তবে দিনের শুরুতেই অজি পেসারদের তোপের মুখে পড়ে ভারত।

দিনের সপ্তম ওভারে ম্যাচে পাল্লা নিজেদের দিকে টেনে নেয় অস্ট্রেলিয়া। স্কট বোল্যান্ডের সেই ওভারের প্রথম বলেই কট বিহাইন্ডের আবেদনে রিভিউ নিলেও তা কাজে আসেনি। তবে তৃতীয় বলে সে আক্ষেপ দূর হয় অজিদের। অফ স্টাম্পের বাইরের ফুল লেংথের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন ৪৯ রান করা কোহলি। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে দারুণভাবে তা তালুবন্দী করেন স্টিভেন স্মিথ।

এক বল পর আবার আঘাত হানেন বোল্যান্ড। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরের পথ ধরেন রবীন্দ্র জাদেজা। অফ স্টাম্পের একটু বাইরে লেংথ বলটির মুভমেন্ট বুঝতে না পেরে উইকেটে পেছনে ক্যাচ দেন জাদেজা। সে ওভারের শেষ বলেও উইকেট পেতে পারতেন বোল্যান্ড। শ্রীকর ভরতের ক্যাচ স্লিপের একটু ওপর দিয়ে যাওয়ায় তা হাতে জমাতে পারেন নি ডেভিড ওয়ার্নার। ছয় বলের ব্যবধানে ভারতের সংগ্রহ দাড়ায় ৩ উইকেটে ১৭৯ রান থেকে ৫ উইকেটে ১৮৩ রানে।

প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে লড়াই করা রাহানে তাও আশা জোগাচ্ছিলেন। ভরতের সঙ্গে গড়েন ৩৩ রানের জুটি। তবে তিনিও অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে বিলিয়ে দেন উইকেট। তাতেই ভারতের হার পরিণত হয় সময়ের ব্যবধানে। পরের ওভারে লায়নের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন আগের ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করা শার্দুল ঠাকুর। এরপর আর বেশিদূর এগোয় নি ভারতের ইনিংস। স্টার্ক ও লায়ন মিলে ভেঙে দেন ভারতীয়দের টেলএন্ড। তাতে টানা দ্বিতীয়বার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেও খালি হাতে ফিরতে হলো ভারতকে। ৩টি করে উইকেট নেন বোল্যান্ড ও লায়ন।

প্রথম ইনিংসে ১৬৩ রান করা ট্রাভিস হেডের হাতে উঠেছে ফাইনাল সেরার পুরষ্কার। আর অজিদের এই জয়ের ফলে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম দুই আসরের শিরোপা গেল তাসমান-পাড়ের দুই দেশে। টুর্নামেন্টটির অভিষেক আসরে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলো নিউজিল্যান্ড।

leave a reply