কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা তানিয়া আক্তারকে ‘ম্যাডাম’ সম্বোধন না করায় দুই শিক্ষার্থীর স্নাতকের সনদ উত্তোলনের ফরমে স্বাক্ষর না করার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তানিয়া আক্তার ‘কীভাবে সনদপত্র উত্তোলন করবে’ তা দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন দুই শিক্ষার্থী।
অভিযোগকারী দুই শিক্ষার্থী হলেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২০-২১ সেশনের জারিফাহ তাসমিয়াহ প্রেরণা ও রিদওয়ানুল ইসলাম। সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে তারা কর্মকর্তা তানিয়ার দপ্তরে গেলে তানিয়া তাদের সাথে এমন আচরণ করেন বলে জানিয়েছেন তারা।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা স্নাতকের সনদ উত্তোলন কার্যক্রমের এক পর্যায়ে স্বাক্ষরের জন্য অর্থ ও হিসাব দফতরে যাই। এ সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা না থাকায় আমাদেরকে তানিয়া আক্তারের কাছে যেতে বলা হয়। তানিয়া আক্তারের কাছে পরপর দুইবার যেতে হয় আমাদের। দ্বিতীয়বার গেলে তিনি ‘আপনাদেরকে আমি স্বাক্ষর দিব না। আপনাদের সম্বোধন ঠিক নেই। আপনারা ম্যাডাম না ডেকে আপু কেন ডাকছেন?’ এমন মন্তব্য করেন।”
“এসময় আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের স্যার-ম্যাডাম ডাকার বিষয়ে কোথায় লেখা আছে জানতে চাইলে কথোপকথনের এক পর্যায়ে তানিয়া আক্তার বলেন, ‘আপনারা কীভাবে সার্টিফিকেট নিবেন তা দেখে নেব।’ এছাড়া তিনি আমাদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে আগে এমন চাকরি পেয়ে দেখাতে বলেন।”
শেষ পর্যন্ত অর্থ হিসাব দপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার উল্লিখিত দুই শিক্ষার্থীর ফরমে স্বাক্ষর করেননি। তার পরিবর্তে অন্য এক কর্মকর্তা ফরমে স্বাক্ষর করেন।
শিক্ষার্থী রিদওয়ানুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষের দিকে এসে এরকম ঘটনা অপ্রত্যাশিত। এর আগেও বিভিন্ন সহপাঠীদের কাছে প্রশাসনিক ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্ব্যবহারের কথা শুনেছি। আজ নিজের সাথেই হলো। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন আচরণের সম্মুখীন হওয়া লজ্জাজনক।’
এই বিষয়ে অর্থ ও হিসাব দপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা তানিয়া আক্তারকে ফোন দেয়া হলে তিনি বলেন, ‘কাল অফিসে এসে কথা বলেন।’ এরপর তার কাছে ফোনে শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার ও হুমকির ঘটনা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক ঘন্টা পর ফোন দেন। এক ঘন্টা পর ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মো: আবু তাহের জানান, ‘শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সে চাকরিতে নতুন তাই হয়তো বিষয়টি বুঝতে পারেননি। বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে অবগত না।’