জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আগামী নয় মে। দীর্ঘ ১৮ বছরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র একবার সমাবর্তন হয়েছে। প্রায় অর্ধযুগ আগে প্রথম সমাবর্তন হয়েছিল এই প্রতিষ্ঠানটির।
২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল প্রথম সমাবর্তনে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট পাঁচটি ব্যাচের এক হাজার ৩৯৯ জন গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করেন। সমাবর্তনে ২৯জন শিক্ষার্থীকে ৩২টি স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।
এরপর ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সমাবর্তনের আশায় আছেন আরও অন্তত সাতটি ব্যাচের গ্র্যাজুয়েটরা। সর্বশেষ স্নাতক ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা পাশ করে সমাবর্তনের অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অজানা কারণে সমাবর্তনের আয়োজন করছে না।
প্রথম সমাবর্তন ঘিরেও ছিল সমালোচনা। সমালোচনা হয়েছিল সার্টিফিকেট নিয়ে। সেখানে ভুলভ্রান্তি নিয়ে কিছু অভিযোগ উঠে। এরপর নতুন সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়। তা নিয়েও রয়েছে সমালোচনা। নতুন ধরনের সার্টিফিকেট ‘এক পাতার দুই পাশে’ নিয়েও বিতর্ক চলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদ খান বলেন, ‘সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিকট অত্যন্ত গৌরব ও সম্মানের। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ষোড়শ আবর্তনের শিক্ষার্থীরা এ বছর ভর্তি হয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠাকাল থেকে মাত্র একটি সমাবর্তন হয়েছে। সমাবর্তনের অপেক্ষা এখন আক্ষেপে রূপ নিচ্ছে।’
একই শিক্ষাবর্ষের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী জায়েদ বিন খলিল জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রত্যাশা থাকবে, প্রতি বছর সমাবর্তন আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের পরিপূর্ণতা দিতে।’
সিএসই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সুদর্শন আইচ বর্তমানে জনতা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার (আইটি)। তার দাবি, দেশের অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সমাবর্তন হচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আন্তরিক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তারা আয়োজন করতে পারেনি। আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সমাবর্তন আয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের প্রভাষক তানজিল আহমেদ জানান, ‘সমাবর্তনের প্রত্যাশা সবারই থাকে। সমাবর্তন হলে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি বাড়বে।’
ছাত্র উপদেষ্টা ড. তপন কুমার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দ্বিতীয় সমাবর্তন কেন হচ্ছে না, এর উত্তর আমার জানা নেই। তবে করোনা পরিস্থিতি একটা কারণ। এ ছাড়া সমাবর্তন আয়োজনের জন্যে ফান্ড গঠনসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা করার প্রয়োজন আছে।’
এ বিষয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর জানান, ‘দীর্ঘদিন কেন সমাবর্তন হয়নি, তা আমার জানা নেই। সমাবর্তন যাতে হয়, সেই ব্যবস্থা করব। সমাবর্তন না হওয়ার লকটা আমরা ভাঙতে চাচ্ছি। আগামী মে মাসে আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে সময় চাইব।’