ভোগান্তির শেষ নেই নোবিপ্রবি’র মালেক হলের শিক্ষার্থীদের

নানান সমস্যা আর অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আব্দুল মালেক উকিল হল। হলের ক্যান্টিনে উচ্চ মূল্যের খাবার, অপরিচ্ছন্নতা ও সাপ্লাই পানির সমস্যাসহ নানা কারণেই স্বস্তি নেই আবাসিক শিক্ষার্থীদের।

গত বছরের সাত ডিসেম্বর হল প্রভোস্ট কৃষি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান রুবেল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে হলটির সহকারী প্রভোস্ট এর দায়িত্বে থাকা সুব্রত ভৌমিক প্রভোস্ট এর দায়িত্ব পালন করে আসছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হল প্রভোস্টের পদত্যাগের পর থেকে হলটির এসব সমস্যা সমাধানে নজর নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হলের ওয়াশরুমগুলো নিয়মিত পরিস্কার করা হয় না, ঠিকমত পানি সাপ্লায়ের সুব্যবস্থা নেই। হলের ক্যান্টিনে উচ্চমূল্যে খাবার খেতে হয় শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও সবক’টি ফ্লোর ময়লা আবর্জনায় ভরে থাকতে দেখা যায় সবসময়।

মালেক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সজিব হোসাইন বলেন, আমাদের হলের ডাইনিংয়ে কোনও ভর্তুকি নেই। নেই কোনও তদারকি যার ফলে বিভিন্ন সময়ে হলের খাবারে ক্ষতিকর পোকামাকড় পাওয়া যায়। আমাদের হলের ডাইনিংয়ে যে মূল্যে খাবার পরিবেশন করা হয় তা একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে বহন করা কষ্টকর। তিনি বলেন, তিন বেলা খাবারের জন্য একজন শিক্ষার্থীকে দৈনিক সর্বনিম্ন  ১৩০ টাকা খরচ করতে হয়। 

নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক দ্বিতীয় বর্ষের এক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, হল প্রভোস্ট থাকাকালীন অধ্যাপক মেহেদী হাসান আমাদের কথা শুনলেও বাস্তবে কোনও কাজ হতো না। এখনতো হল প্রভোস্ট নেই, এখন কীভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হল আশা করবো আমরা?

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের তিনটি হল বঙ্গবন্ধু হল, বঙ্গমাতা হল এবং বিবি খাদিজা হলের তুলনায় মালেক উকিল হলে খাবারের দাম বেশি। মুরগী, মাছ, সবজি যেকোনও খাবারের মূল্যের বেশ পার্থক্য রয়েছে। ছেলে এবং মেয়েদের হলের খাবারের প্রত্যেক আইটেমে পার্থক্য রয়েছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

এসব অনিয়মের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করছেন ছাত্র হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, ছাত্র হল চলছে নানা অব্যবস্থাপনায়। কেউ এগুলো সমস্যা সমাধানের জন্য কোনও পদক্ষেপও নেয়না।

হলের এসব সমস্যা বিষয়ে নোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী বলেন, হলের প্রভোস্ট না থাকা এবং নানাবিধ সমস্যার বিষয় আমরা জেনেছি। এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। আশা করছি অতিদ্রুত সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

আর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম বলেন, হল প্রভোস্ট পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন, কিন্তু এটি এখনো আমরা গ্রহণ করিনি। কেন তিনি পদত্যাগ করতে চাচ্ছেন, তার সঙ্গে কথা বলে দ্রুত এই বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। হল প্রভোস্ট দেয়া হলে বাকি সমস্যা গুলোর সমাধান হয়ে যাবে বলে আশাবাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। 

leave a reply