লক্ষ্মীপুরে দু’টি হত্যা মামলার রায়ে আটজনের যাবজ্জীবন

লক্ষ্মীপুরে পৃথক দু’টি হত্যা মামলায় আটজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম রায় ঘোষণা করেন।

এরমধ্যে যুবলীগ নেতা আব্দুল হান্নান সুমন হত্যায় ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় দু’জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে, হানিফ হত্যা মামলায় দু’জনের যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় ছয়জনক খালাস দেওয়া হয়। মামলার আসামি ইলিয়াস কোবরা মারা যাওয়ায় তাকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। দুই মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা পলাতক রয়েছে।

যুবলীগ নেতা সুমন হত্যায় সাজাপ্রাপ্তরা হলেন কাউছার, খোরশে আলম, সোহেল রানা, সোহাগ, রাব্বী ও কালা শাহাদাত। তারা সদর উপজেলার দত্তপাড়া, গোপালপুর ও দক্ষিণ মাগুরী গ্রামের বাসিন্দা। এ মামলায় খালাস প্রাপ্তরা হলেন বাবুল ওরফে বাবলু ও মানিক এলাহি বাবুল। তারা দত্তপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। নিহত সুমন উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ছয় ডিসেম্বর ছেলে সাইফ হান্নানকে নিয়ে রিকশাযোগে সুমন বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আসামিরা তার গতিরোধ করে। এ সময় আসামিরা তাকে রিকশা থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আট ডিসেম্বর নিহতের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা করেন। ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অপরদিকে হানিফ হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্তরা হলেন দিদার হোসেন ও ফারুক হোসেন। তারা সদরের উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের উত্তর মাগুরী গ্রামের বাসিন্দা। এ মামলায় মো. ইলিয়াস ওরফে ইলিয়াস কোবরাও সাজা আওতায় থাকলেও তিনি মারা যাওয়া তাকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। খালাস প্রাপ্তরা হলেন মো. রিপন, মো. রনি, ওমর ফারুক, ইসমাইল হোসেন মুন্সি, মো. বাবলু, মো. রিয়াদ। এ মামলার অন্য আসামি জসিম উদ্দিন ২০১৫ সালের আট জুন সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোলাগুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এতে তাকেও মামলা থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছিল।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চাঁদার দাবিতে ২০১৫ সালের সাত এপ্রিল সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসামিরা হানিফকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় ১৫ মে হানিফের বোন মনোয়ারা বেগম বাদীয় হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চন্দ্রগঞ্জ থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে এ রায় দেন।

জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, সাজাপ্রাপ্তরা চাইলে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন।

leave a reply