শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-৩ আসনের সাংসদ নাহিম রাজ্জাকের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন এক চেয়ারম্যান প্রার্থী। মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ডামুড্যা উপজেলা নির্বাচন অফিস ও রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর এই অভিযোগ করেন তিনি।
ওই প্রার্থী হলেন ধানকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক পিন্টু। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি আনারস প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করছেন। লিখিত অভিযোগে বলা হয়, চতুর্থ ধাপে ডামুড্যা উপজেলার ধানকাটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৬ ডিসেম্বর। এটি একটি উন্মুক্ত নির্বাচন। কিন্তু শুরু থেকে স্থানীয় সাংসদ নাহিম রাজ্জাক এই নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, ইতোপূর্বে আমাকে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়াতে নানান রকম চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে। বর্তমানে আমার লোকজনকে হুমকি ধামকি ও মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে। তিনি তার সংসদ ভবন অফিসে স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা করেছেন। ১৩ ডিসেম্বর সকাল ৯ টার দিকে সাংসদ ধানকাটি ইউনিয়নে নেতাকর্মীদের নিয়ে ইউনিয়নের ৬টি স্থানে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িতে সভা করে ভোট চেয়েছেন। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পদে পদে বিঘ্ন সৃষ্টি করছেন।
এদিকে, অভিযুক্ত সাংসদ বলেছেন, আবার ভোটের পূর্বে এলাকায় আসবেন তিনি। তার কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সাংসদের হস্তক্ষেপমুক্ত একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অধিক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিযুক্ত করার আহবান জানাই।
প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক পিন্টু জানান, গতকাল ১৩ ডিসেম্বর সাংসদ ধানকাঠি ইউনিয়নের তাঁর সমর্থিত প্রার্থী গোলাম মাওলা রতনের (ঘোড়া প্রতিক) পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন।
গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন গোলাম মাওলা রতন, তার প্রতীক ছিল চশমা। ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজার, ১ নম্বর ওয়ার্ডের চরপাতালিয়া মীরবাড়ি, ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাহেরচর, বাহেরচর মেম্বারের বাড়ি, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বাসকান্দি ব্যাপারী, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দশমনতারা গোলাম মাওলা রতনের (ঘোড়া প্রতিক) বাড়ি এই ছয়টি জায়গায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন সাংসদ। তিনি এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
গতকাল সাংসদের সঙ্গে ছিলেন ডামুড্যা উপজেলা আওয়ামী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ুন কবির বাচ্চু ছৈয়াল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বাবলু সিকদার, ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ গোলন্দাজ, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান রুবেল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মন্টি, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শামীম, উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি ও প্রার্থী গোলাম মাওলা রতন প্রমূখ।
তবে সাংসদ নাহিম রাজ্জাক মোবাইল ফোনে বলেন, আমি ইউনিয়নগুলোতে ঘুরেছি। কিন্তু কারও পক্ষে ভোট চাইনি। আমি শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি প্রার্থীসহ স্থানীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাই।
ডামুড্যা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ধানকাঠি ইউনিয়ন পরিষদ রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, অভিযোগের আবেদনটি আমরা পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হবে।
Leave a Reply