বর্ষা কাল চলছে। এই সময়টা সাপের প্রজনন মৌসুম। মাঝে মাঝেই এখন বসতবাড়ি বা আশেপাশে দেখা মেলে বিষ-নির্বিষ বিভিন্ন রকমের সাপ। গবেষণা অনুযায়ী, দেশে বছরে প্রায় সাত লাখ মানুষকে সাপে কামড়ায়। তাদের মধ্যে ছয় হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। বিষধর সাপের কামড়ের হার ২০ শতাংশ।
সম্প্রতি (২০১৬ সাল) বন্যাকবলিত ১৯ জেলায় এ পর্যন্ত ১২০ জনকে সাপে কাটে, এর মধ্যে ২৩ জন মারা যায় বলে পত্রিকায় খবর প্রকাশ হয়েছে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। বর্ষাকালে ও বন্যার সময় সাপের উপদ্রব বাড়ে। এ সময় সাপে কাটার ফলে মানুষের মৃত্যু বেশি হয়।
অনেকেই বাড়িতে কার্বলিক এসিড রেখে মনে করেন সাপ বুঝি আসবে না। এই বহুল প্রচলিত ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কার্বলিক এসিড এর ব্যারিকেড পার করে সাপ অনায়াসে ঘুরছে।
তবে আমরা আলোচনা করব ড্রাই বাইট সম্পর্কে। অনেক সময় মানুষ বলে সাপে কাটলে ওঝার কাছে গেলে কাজ হয়, ঝাড় ফুঁক করলে কাজ হবে ইত্যাদি। কিন্তু তারা জানে না তারা কেন বেঁচে গেছেন। আসলে বিষধর সাপ অনেক সময় কামড়ালেও বিষ ঢালে না। হতে পারে তার বিষগ্রন্থিতে পর্যাপ্ত বিষের অভাব অথবা শুধুই নাজেহাল করার উদ্দেশ্যেই কামড়ানো।
ড্রাই-বাইট হলো বিষহীন কামড়। মোটামুটি সব বিষধর সাপ-ই ড্রাই-বাইট করে থাকে। মানে, সহজ ভাষায় কামড় ঠিকই দেবে, কিন্তু বিষথলি থেকে বিষ ঢালবে না। কেননা, বিষধর সাপগুলো তাদের বিষ থলিতে জমা রেখে দেয় অন্যান্য শিকারের জন্য। তাই, শুধু ঝুঁকি কমাতে ড্ৰাই-বাইট করে। কেননা, আবার বিষ উৎপন্ন হতে হতে সাত-আটদিন সময় লেগে যায়।
এই ড্রাইবাইট সম্পর্কে অজ্ঞতা ৯৯% মানুষের। আর সেখানেই সুযোগ পায় ওঝারা। কারণ আমরা দুটো দাগ দেখেই বিষধর কিনা মনে করি। কিন্তু কখোনো কখোনো এক, তিন বা চার দাঁত বসার ঘটনাও দেখা গেছে। আবার কিছু কালাচ এর কামড় বোঝাও যায় না বা ঘরগিন্নি নির্বিষ হলেও কামড়ের দাগ বসেই যায়।
তাই বা সাপে কামড়ালে বা লক্ষণ দেখলে দ্রুত হাস্পাতালে যাওয়া উচিত। সাপ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য কাজ করা উচিত সবার।
Leave a Reply