করোনা মহামারীর মধ্যেই মাথাচাড়া দিয়েছে উঠেছে ‘মিউকরমাইকোসিস’ নামক ছত্রাকঘটিত রোগ। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ফুসফুসের সমস্যা কিংবা ক্যানসার আক্রান্ত এমন রোগীদের ক্ষেত্রে মিউকরমাইকোসিসের ভয়াবহতা আগেও ছিল, এখনও আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে বর্ষায় কিন্তু কিছুটা হলেও বাড়তে পারে এই রোগের দাপট। কেন এমনটা বলা হচ্ছে? বর্ষার মধ্যে এই রোগের দাপট বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ হিসেবে ছত্রাকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকেই দায়ী করেছেন চিকিৎসকেরা।
বর্ষাকালে চামড়ার ব্যাগ, জুতো দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় রেখে দেয়া হয় তাহলে দেখা যায় সেখানে ছত্রাক জন্মেছে। এই ঋতুতে যেকোনও ছত্রাকই বৃদ্ধি পায়। এবার যেহেতু কোভিড রয়েছে সেই কারণে মিউকর কিংবা অ্যাসপারজিলোসিস আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, ‘করোনা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই রোগ কমে যাওয়ার কথা।
সাধারণ হিসেব থেকে জানা যায়, চার লাখ কোভিড রোগীদের মধ্যে যদি চার হাজার জন মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হয় তাহলে পরবর্তীতে আক্রান্ত কমে লাখ হলে এই রোগও দুই হাজার হওয়ার কথা। তবে এর কম বেশি হতেই পারে। শুধু তো কোভিড নয়। দেখা যায় মিউকরমাইকোসিস রোগীরা যেখানে রয়েছে সেই একই ওয়ার্ডে লিউকেমিয়া, এইচআইভি রোগীরাও রয়েছে। তাদের দেহেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। যেহেতু এটি বায়ুবাহিত ফলে অনায়াসে কোভিড আক্রান্ত নয় এমন রোগীর দেহেও ছড়িয়ে পড়ছে এই ছত্রাকটি।’
চিকিৎসকদের পরামর্শ, কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও পরবর্তী দুই থেকে তিন মাস অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে রোগীকে। কারণ তাদের দেহে ইমিউনিটি লেভেল কিন্তু একেবারে তলানীতে। কোভিডের অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও আনুষঙ্গিক প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে শরীরে। সেক্ষেত্রে কোনও রোগী যদি দেখেন মাথা ব্যথা করছে, কিংবা চোখের পিছনে কিংবা নাকের দুই পাশ যেখানে সাইনাস থাকে সেখানে ব্যথা, সর্দিতে রক্ত এরকম উপসর্গ দেখলে সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। মিউকরমাইকোসিস প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে চিকিৎসা করলেও ৫০ শতাংশ মর্টালিটি কিন্তু থাকে।
Leave a Reply