সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বুধবার (২৫ অক্টোবর) ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। তিনি বলেন, সৈয়দ আবুল হোসেন মারা গেছেন। মৃত্যুর বিষয়টি তার পরিবার আমাকে জানিয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে মাদারীপুর-৩ আসন থেকে ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবুল হোসেন। এরপর সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রীর (বর্তমান নাম সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়) দায়িত্ব পালন করেন।
সৈয়দ আবুল হোসেন ১৯৫১ সালে মাদারীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পেশায় একজন রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী। এছাড়াও শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক হিসেবেও এলাকায় তার খ্যাতি রয়েছে। তা স্ত্রীর নাম খাজা নার্গিস। তার দুই মেয়ে সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন ও সৈয়দা ইফফাত হোসেন।
২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের চুক্তি সই করে সরকার। একই বছরের শেষ দিকে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনে বিশ্বব্যাংক। সমালোচনা শুরু হলে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন তিনি। সেতু বিভাগের তৎকালীন সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকেও দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হয়। পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তাকে জেলে পাঠানো হয়।
পরে ২ ফেব্রুয়ারি পদ্মা সেতুর ঠিকাদার নিয়োগে কোনও ধরনের দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দেয় দুদক। এদিকে ৩০ জুন পদ্মা সেতুর ঋণ চুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। এরপর সেই বছরের ৯ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগে কানাডার আদালতে একটি মামলা হয়। পাঁচ বছর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কানাডার আদালত জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র বা চেষ্টার যে অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক ঋণ বাতিল করেছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
কানাডার আদালত মামলাটি খারিজ করার সময় দুটি কারণ উল্লেখ করেছেন। একটি হলো অন মেরিট, অন্যটি হলো অন টেকনিক্যাল গ্রাউন্ড। আদালত অন মেরিট বিষয়ে বলেছেন, মামলায় যা বক্তব্য, সেগুলো হচ্ছে গুজবনির্ভর এবং এটার কোনও প্রমাণ নেই। দ্বিতীয়ত টেকনিক্যাল গ্রাউন্ড হলো, ওয়্যার ট্যাপিংয়ের মাধ্যমেও কোনও তথ্য আসেনি, যেটা একটা মামলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো হতে পারে।