সব দলের অংশগ্রহণে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে অবাধ-সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে তিনি তা বাস্তবায়ন করবেন বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার।
মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা এবং কক্সবাজারে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ব্যস্ত সময় কেটেছে আমার। সোমবার আমি পররাষ্ট্র সচিব মোমেন এবং আরও কয়েকজন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমাদের মধ্যে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কথা হয়েছে, যেগুলোর মধ্যে দুদেশের সম্পর্ক, অর্থনৈতিক সুসম্পর্ক, নারীর ক্ষমতায়ণ সম্পর্কিত নানা ইস্যু ছিল। পাশাপাশি গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ইস্যুতেও আমাদের কথা হয়েছে যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
আফরিন আক্তার বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন চায় যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই ও স্থায়ী সমাধান চাই আমরা। কিন্তু মিয়ানমারে এখনও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। মিয়ানমার সরকার সেখানে কোনও মানবাধিকার সংগঠনকে প্রবেশ করতে দেয় না। ফলে সেখানকার আসল পরিস্থিতি জানা যাচ্ছে না।’
এর আগে সকালে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান আফরিন আক্তার। পরিদর্শন শেষে বিকেলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন তিনি।
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, আফরিন আক্তার মঙ্গলবার দিনব্যাপী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং ক্যাম্পে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার পরিচালনায় নানা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এছাড়া তিনি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধি দলের সাথেও মতবিনিময় করেন।
আরআরআরসি জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আফরিন আক্তারের নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধি দলটি উখিয়ার কুতুপালংয়ে ৪ নম্বর ক্যাম্পের রেজিস্ট্রেশন সেন্টারে পৌঁছে রোহিঙ্গাদের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম দেখেন। পরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা ওমেন সেন্টার, লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ সেন্টার ও জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পরিচালিত ই-ভাউচার সেন্টারের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এরপর দুপুরে ১১ নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধি দলের সাথে মতবিনিময় করেন।
কক্সবাজারের ১৪ এপিবিএনের সহ-অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) সাইফুজ্জামান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারিসহ একটি প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখছেন।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ছাড়াও ইউএনএইচসিআর, ইউনিসেফ, ডব্লিউওএফপি ও আইওএমসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন মার্কিন প্রতিনিধি দল।