১৭ মে শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসার মধ্যে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল মানুষ অন্ধকারে আলোর সন্ধান পেয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ফিরে না আসলে বাংলার মানুষ তাদের ভোটের ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেত না।
বুধবার গাজীপুর সদর থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন৷
এস এম কামাল হোসেন বলেন, ৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে হত্যা করার মধ্যদিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান ‘জগদ্দল পাথরে’র মত বাঙালি জাতির উপর চেপে বসেছিল।
জিয়াউর রহমানের শাসন আমলকে বাংলার অন্ধকার যুগ বর্ণনা করে তিনি বলেন, সেসময় সেনাবাহিনীতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল অফিসার জওয়ানদের হত্যা করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রায় সাড়ে চার লাখ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, অনেককে গুম করা হয়েছিল, অনেককে হত্যা করা হয়েছিল। বিমান বাহিনীর ৫৫১ জন অফিসারকে হত্যা করা হয়েছিল। বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল জিয়া।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন এই নেতা।
ওই সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, চারিদিকে সেনা ও বিমান বাহিনীর অফিসার জওয়ানদের স্ত্রী-সন্তানদের আর্তনাদ-আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছিল। মানুষের ভোটের অধিকার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল। বাংলাদেশে তখন স্লোগান উঠেছিল, ‘আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগানিস্তান’। স্বাধীনতা বিরোধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সেই অন্ধকার যুগে আলোর দিশারী হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, শত বাধা বিপত্তি ও প্রতিকূলতার মধ্যেদিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ই মে দেশে এসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যাত্রা শুরু করেছিলেন শেখ হাসিনা। তাঁর সাহসিকতা, দেশপ্রেম এবং দৃঢ় নেতৃত্ব বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলেন। শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়েছে, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, বাংলাদেশ আজকে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
এসময় তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সৎ ,সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ আজকে প্রতিষ্ঠার পথে। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও লেখাপড়ার নিশ্চয়তা। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজকে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন। তাইতো আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।
সকল ষড়যন্ত্রের দাতভাঙা জবাব দেওয়ার হবে জানিয়ে এস এম কামাল হোসেন বলেন, আজকেও ষড়যন্ত্রকারীরা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে, অপপ্রচার করছে, ষড়যন্ত্র করছে। আমি গাজীপুরবাসীকে অনুরোধ করছি ২৫ তারিখ জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে ষড়যন্ত্রকারী-মিথ্যা অপপ্রচারকারীদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে।
এসময় তিনি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নৌকার বিজয়ের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর সদর মেট্রোপলিটন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়াজ উদ্দিন মিয়া। এছাড়া অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন, আমানত হোসেন খান, হাদীউল ইসলাম হাদী, রফিজ উদ্দিন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগ ও সদর মেট্রো থানা আওয়ামী লীগের নেতারা।