প্রায় এক বছর পর মুখোমুখি বৈঠকে বসলেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রেসিডেন্ট। বুধবার জো বাইডেন ও শি জিনপিং প্রায় চার ঘণ্টা বৈঠক করেন। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক বিষয় এ আলোচনায় উঠে এসেছে বলে বৃহস্পতিবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
সব মিলিয়ে মোট পাঁচটি মূল বিষয় দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে। সেগুলো হলো: সামরিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের যোগাযোগ রক্ষা, তাইওয়ান প্রসঙ্গ, দু’দেশের অর্থনীতি, যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষতিকারক মাদক হিসেবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া ফেনটানিল এর কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্তসহ গাজার চলমান পরিস্থিতি ও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আরও নিরাপত্তা করিডর চালু ও মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হওয়া নিয়ে কথা বলেন এই দুই নেতা।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বাইডেন জানান, তিনি চাইলেই যেকোনও সময় ফোন হাতে নিয়ে শি কে ফোন করতে পারবেন এবং তিনি সেই কল রিসিভ করবেন। শি তাকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করবেন।
বৈঠকের পর শি বলেন, ‘১২ বছর আগে থেকেই (আমার আর বাইডেনের) যোগাযোগ চলছে। আমার এখনো সেসব আলোচনা খুব ভালো করেই মনে আছে। আমি প্রায়ই এগুলো নিয়ে চিন্তা করি।’
শি ও বাইডেনের যোগাযোগ শুরু হয় এক যুগ আগে, যখন দুইজন নিজ নিজ দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন।
তাইওয়ান প্রসঙ্গে শি বাইডেনকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাইওয়ানকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করে চীন-তাইওয়ান একীভূতকরণের শান্তিপূর্ণ উদ্যোগে সমর্থন জানানো।’
এদিকে, বুধবারের বৈঠকে বাইডেন, চীনকে অনুরোধ করেন তাইওয়ানের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান জানাতে। আগামী জানুয়ারিতে তাইওয়ানে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যেখানে জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তাইওয়ানের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই।
এছাড়া ফেনটানিল এর কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয় দুই নেতার মধ্যে। অবৈধ ফেনটানিল মাদক তৈরিতে যেসব কাঁচামাল ও রাসায়নিক উপকরণ ব্যবহার হয়, সেগুলো যাতে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে না আসে, সে বিষয়টির দেখভাল করার অঙ্গীকার করেন শি। বাইডেন বলেন, ‘এতে মানুষের জীবন বাঁচবে এবং আমি এ বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্ট শি’র অঙ্গীকারের প্রতি সাধুবাদ জানাই।
গাজার চলমান পরিস্থিতি ও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আরও নিরাপত্তা করিডর চালু ও মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হওয়া নিয়ে কথা বলেন দুই নেতা। যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে যেতে পারে, এই আশংকায় বাইডেন, শিকে অনুরোধ করেন ইরানের সঙ্গে আলোচনা করতে এবং তাদেরকে কোনও ধরনের উসকানিমূলক আচরণ থেকে বিরত রাখতে।