ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকেল তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের অবস্থানের কারণে মহাসড়কের দু’পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘণ্টাখানে অবরোধের পর বিকেল চারটার দিকে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে সরে আসলে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় শামসুজ্জামানকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করা হয়। সেখানে তাকে কারাগারে রাখার জন্য আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও রমনা থানার পরিদর্শক আবু আনছার। অপরদিকে, মামলায় জামিন চেয়ে শামসুজ্জামানের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর বেলা সাড়ে তিনটায় তাকে (শামসুজ্জামান) কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। সেখান থেকে শুক্রবার গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাকে।
এর আগে গত ২৬ মার্চ প্রথম আলোর অনলাইনে প্রকাশিত একটি শিশুর ছবি ও ক্যাপশনে অসংগতি থাকার প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। ১৭ মিনিটের মাথায় প্রথম আলো ছবি ও ক্যাপশনটি সরিয়ে ফেলে এবং ভুল স্বীকার করে জানায়, ছবির ভুলে এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় গত বুধবার ভোর চারটার দিকে আশুলিয়ার আমবাগান এলাকার বাসা থেকে শামসুজ্জামানকে তুলো নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ওই দিন দুপুরে গোলাম কিবরিয়া নামের এক ব্যক্তি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এছাড়া বুধবার মধ্যরাতে আব্দুল মালেক নামে এক আইনজীবী একই আইনে রমনা থানায় আরেকটি মামলা করেন। মামলায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান ও সহযোগী ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়। এই মামলায় শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।