খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদের জীবন কর্ম নিয়ে ‘শাহাবুদ্দিন, দ্য পেইন্টার, দ্য ফাইটার’ শিরোনামে পাঁচ দিনব্যাপী একক চিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। শনিবার বিকেলে রাবির চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।
চারুকলা অনুষদের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন একাডেমিক ভবনে আলোকচিত্র শিল্পী ইফতেখার ওয়াহিদ ইফতি’র এই প্রদর্শনী চলবে আগামী বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনীতে চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের জীবন কর্মের বিভিন্ন সময়ের অর্ধশত আলোকচিত্র রয়েছে।
অনুষ্ঠানে রাবি উপাচার্য বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিল্পী শাহাবুদ্দিনের উপস্থিতি আমাদের ঋগ্ধ করেছে। ১৯৭০ সালে যখন দুর্বোধ্য চিত্রকলার একটা জগৎ সৃষ্টি হয়েছিল, তার সঙ্গে কিন্তু শিল্পী শাহাবুদ্দিন গাট ছাড়া বাঁধেননি। উনি নিজের একটি চিত্রজগৎ সৃষ্টি করেছেন। তার জীবনটিই এক বিশাল ক্যানভাস। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিল্পী শাহাবুদ্দিনের নামে আর্ট গ্যালারি নির্মাণের বিষয়ে মেয়রের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে লিটন বলেন, ক্যাম্পাসে এই গ্যালারি নির্মাণ করলে চারুকলার শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি সুন্দর জায়গা নির্ধারণ করে দিলে আগামী তিনমাসের মধ্যে গ্যালারিটির ভিত্তিপ্রস্তর নির্মাণ করা হবে।
চিত্রশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, নবীন চিত্রশিল্পীদের ছবি আঁকা শেখার জন্য ভালো শিল্পী বাছাই করতে হবে। আর এজন্য সাধনাও করতে হবে। অনেকে শিল্প নিয়ে সুন্দর কথা বলতে পারলেও ভালো কাজ করতে পারেন না। একেকজন একেক ক্ষেত্রে দক্ষ। এজন্য আমি যতবার শিল্পকর্ম নিয়ে বলতে যাচ্ছি, ততবারই পিছিয়ে যাচ্ছি, যেন আমি কিছুই জানিনা। আমি মেঘনার তীরে বেড়ে ওঠা মানুষ। এজন্য আমার ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড বা ছবিতে পানি পানি ভাব আছে, আর রক্তের ভাব আছে। কারণ তা না থাকলে তো যে কেউ মৃত।
রাবির চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. হুমায়ন কবীর, কবির বিন আনোয়ারের সহধর্মিণী তৌফিকা আনোয়ার।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির সভাপতি ও রাবির ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম ও আইএফআইসি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিতাংক দেবদীপ দত্ত। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইআরসি ও শিলালিপি‘র ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদুল হাসান সুমন।
আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর আলোকচিত্রগুলো ঘুরে দেখেন চিত্রশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।