রাবিতে অনুষ্ঠিত হল পঞ্চম লাইভস্টক সেমিনার ও মেলা

‘মধ্যম আয়ের দেশ গড়তে প্রাণিজ আমিষের অবদান’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ম লাইভস্টক সেমিনার ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এ্যানিমেল সায়েন্সেস অনুষদ ও বাংলাদেশ লাইভস্টক সোসাইটি যৌথভাবে এসব আয়োজন করে। 

শনিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে মেলার উদ্বোধন করেন রাবি উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার। উদ্বোধন শেষে উপাচার্য মেলার স্টলগুলো পরিদর্শন করেন। এসময় উপ-উপাচার্যদ্বয় প্রফেসর ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও প্রফেসর ড. মো. হুমায়ুন কবীর, ভেটেরিনারি ও এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. জালাল উদ্দিন সরদারসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে লাইভস্টক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও লাইভস্টক অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন রাবি উপাচার্য ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।  অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট ও খাদ্যসংকটের আভাস দেয়া হচ্ছে। তবে কৃষক ও কৃষির অবদানের কারণে আমরা কখনও দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হবো না। মাঠ পর্যায়ের কৃষি সমস্যাগুলো কৃষকেরা সবচেয়ে ভালো জানেন। মাঠ পর্যায়ের সাথে যৌথতা না থাকলে আমাদের গবেষণার জ্ঞানকে কাজে লাগাতে পারব না। তাই ইন্ড্রাস্টির সাথে কৃষকদের যোগাযোগ বৃদ্ধি করা জরুরি। না হলে আমাদের উৎপাদন টেকসই হবে না। আমাদের টিকে থাকতে হবে, টিকে থাকতে থাকতে সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে৷  

সেমিনারে কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. নাথু রাম সরকার ‘মধ্যম আয়ের দেশ গড়তে প্রাণিজ আমিষের অবদান’ শিরোনামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগের উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষে কৃষক, গবেষকদের অবদানের জন্যই এই সেক্টরে সফলতা এসেছে। তবে বাণিজ্যের কারণে খাদ্য দ্রুত উৎপাদন করে সরবরাহ করা হচ্ছে। দ্রুত উৎপাদনের কারণে খাদ্যের মধ্যে ক্ষতিকর কোনো উপাদান যুক্ত হয়ে মানুষ যেন দীর্ঘমেয়াদী ঝুঁকির সম্মুখীন না হয় সেদিকে খেয়াল করতে হবে। মানুষকে পর্যাপ্ত তথ্য দিয়ে আস্বস্ত করতে হবে যে তারা নিরাপদ খাদ্য পাচ্ছে। খাদ্য সম্পর্কিত প্রকৃত তথ্য মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। 

রাবির ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন ও বিএলএস এর সভাপতি প্রফেসর ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদারের সভাপতিত্বে সেমিনার ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এসিআই লিমিটেডের চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ড. এম এ সালেক প্রমুখ।

এদিকে অনুষ্ঠানে ৪টি ক্যাটাগরিতে ১৪ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মোস্ট ভ্যালুয়েবল পারসর অব দ্য ইয়ার ক্যাটাগরিতে লাইভস্টক শিল্প (প্রতিষ্ঠান) কাজী ফার্মস লিমিটেড, লাইভস্টক শিল্প (ব্যক্তি), আমিনুল ইসলাম, লাইভস্টক গবেষণায় প্রফেসর ড. সুবাস চন্দ্র দাস, লাইভস্টক শিক্ষায় প্রফেসর ড. এম রাশেদ হাসনাত, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডা. গোলাম মোস্তফা। 

হাইয়েস্ট সার্ভিস প্রোভাইডার ক্যাটাগরিতে লাইভস্টক শিল্পে ইয়ন বায়ো সায়েন্স লিমিটেড, প্রাণিসম্পদের মাঠ পর্যায় হতে-উদ্যোক্তা আদর্শ প্রাণিসেবা লিমিটেড, মাঠ পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবী অঞ্জনা রাণী। জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণি সংরক্ষণে সাইফুল ইসলাম, প্রোমিজিং ক্যাটাগরিতে ফার্মার অব দ্য ইয়ার লাইভস্টকে সুরাইয়া ফারাহানা রেশমা, পোল্ট্রি শিল্পে ওয়াহেদুজ্জামান সিকুল, সৌখিন পাখি শিল্পে মফিজুর রহমান অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।

এছাড়া ক্যাটালিস্ট মিডিয়া পার্সন হিসেবে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের কৃষিবিদ ফয়জুল সিদ্দিকী এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় পোল্ট্রি খামার বিচিত্রার কামাল আহম্মদ। অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে স্মারক তুলে দেয়া হয়। 

বিকেলে বাংলাদেশ লাইভস্টক সোসাইটির বার্ষিক সাধারণ সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রাণিসম্পদ মেলা শেষ হয়।

leave a reply