রাত পোহালেই গাজীপুরে ভোটযুদ্ধ শুরু

গাজীপুরে ভোটযুদ্ধের সব প্রস্তুতি শেষ। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত চলবে দেশের সবচেয়ে বড় সিটি করপোরেশনের ভোট। এদিন মেয়র ও কাউন্সিলর বেছে নিতে ভোট দেবেন ১১ লাখ ৭৯ হাজার ভোটার।

২০১৮ সালের গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ছয়টি কেন্দ্রে ইভিএম ও তিন কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকলেও এবার এই সিটি নির্বাচনে সবগুলো কেন্দ্রেই ইভিএমের পাশাপাশি সিসি ক্যামেরাও থাকছে। এছাড়াও ভোটের আপডেট ও ফলাফল দ্রুত সংগ্রহে ব্যবহার করা হবে ট্যাব।

এবারের নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশ না নিলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, গণফ্রন্ট, ইসলামী আন্দোলন, জাকের পার্টিসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছেন।

তবে এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খান ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনের মধ্যেই মূল লড়াই হবে। আর বাড়তি আগ্রহ থাকছে সরকার শাহনূর ইসলাম রনি ভোটের মাঠে থাকায়। রনি গত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের ভাতিজা।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রের তিন হাজার ৪৯৭টি কক্ষে ভোট গ্রহণ করা হবে। ইভিএমে ভোট গ্রহণ নিয়ে গাজীপুরের মানুষের অস্বস্তি রয়েছে। অনেক প্রার্থী ও ভোটার ইভিএম সম্পর্কে অবগত নন। ভোটার উপস্থিতি ভালো হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভোট গ্রহণ শেষ করা যাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

দেশের সবচেয়ে বড় সিটি করপোরেশন গাজীপুরে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, ইভিএমে ভোট দেয়ার পদ্ধতি নিয়ে যথেষ্ট প্রচার হয়নি। তবে, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, গাজীপুরে ভোটাররা এবারই প্রথম ইভিএমে ভোট দেবেন। এটি নিয়ে ভোটারদের মধ্যে নানা ধরনের ভীতি কাজ করেছে। এসব ভীতি দূর করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ইসি। প্রার্থীদেরকে ডামি ইভিএম ব্যবহার করে ভোটারদের ভীতি দূর করার উদ্যোগ নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রের ৩ হাজার ৪৯৭টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সব কেন্দ্রের সব কটিতেই ইভিএমে ভোট হবে। ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শেষ করেছে ইসি।  

নতুন মেয়র ও কাউন্সিলরদের নির্বাচন করতে গাজীপুরে সবরকম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম। পুরো গাজীপুর নগরী তিন স্তরের নিরাপত্তায় ঢেকে ফেলেছে প্রশাসন। পুলিশ, বিজিবি ও আনসারের পাশাপাশি সাদা পোশাকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।

ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, ইভিএমসহ নির্বাচনের সবরকম প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রস্তুত হয়েছে। ভোটের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।

তিনি আরও বলেছেন, ভোটকেন্দ্রে সব প্রার্থীর এজেন্টকে নিরাপত্তা দেয়া হবে। জানান, নিরপত্তার বিষয়গুলো আমাদের নজরে আছে। এগুলো মাথায় রেখে আমরা সব পরিস্থিতি বিবেচনা করছি এবং সেভাবেই কাজ করছি।এ ধরনের কোনো ঘটনা আমাদের নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ব্যবস্থা নেবে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম আরও বলেন, জেলা প্রশাসনসহ সব বাহিনী মিলে সিটি নির্বাচনকে সফল করার জন্য কাজ করছি। সবাই মিলে আমরা গাজীপুরে মডেল নির্বাচন উপহার দিতে পারব।

এদিকে, ‘নৌকার ভোটটার ছাড়া কাউকে ভোটকেন্দ্রে আসতে দেব না’ এমন হুমকি দিয়ে ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আজিজুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের আগের দিন বুধবার বিকেলে ইসি এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

leave a reply