রাঙ্গাবালীতে সরকারি খাল দখল করে প্রভাবশালীদের মাছ চাষ

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নের ভুঁইয়াকান্দা গ্রামের দোয়াইল্লার খালে বাঁধ (ঘের) ও পুকুর করে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশীদের বিরুদ্ধে। এ খালে বাঁধ ও পুকুর করে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি মাছ চাষ করছেন।

বাঁধ দেওয়ার কারণে খালে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় বীজতলাসহ ফসল আবাদে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন চাষীরা। এছাড়াও বৃষ্টি হলেই ঘরবাড়ি ফসলি জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। পানিতে তলিয়ে থাকায় বাড়ি থেকে বের হতেও হয় কষ্ট করে।

খালটিতে প্রায় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাঁধ দেওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন দুই পাড়ের বাসিন্দারা। বর্ষায় জলাবদ্ধতা ও শুকনো মৌসুমে তরমুজ চাষে মিঠা পানির সংকট দেখা দেয়। এ অবস্থায় বাঁধ কেটে খাল দখলমুক্ত করে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা রাঙ্গাবালী কৃষি অফিস ও ভূমি কমিশনারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

কৃষকরা জানান, আমন আবাদের সময় অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার ফলে চাষাবাদ ব্যাহত হয়। পানি আটকে রেখে মাছ চাষ করছেন তারা। এতবড় খালে ২০-২২ ইঞ্চি একটি কপাট করে তাদের ইচ্ছামত পানি উঠায় এবং নামায়। এভাবে সরকারি জায়গা নিজেদের দখলে নিয়ে মাছ চাষ করলে কৃষরা ভবিষ্যতে জমি চাষাবাদ করতে পারবেনা। প্রভাবশালীরা মাছ চাষ করে তাদের নিজেদের লাভের জন্য। গরীব কৃষক জমি চাষের অভাবে মরে যাচ্ছে এতে তাদের কিছু আসে যায়না। এত কষ্ট করে আমাদের জন্য চাষাবাদ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

কৃষক মোশাররাফ বলেন, এই খালটি যখন খোলা ছিল তখন আমরা খালে মাছ ধরে বিক্রি করে সংসার চালাতাম। খালে বাঁধ দেয়ার পর মাছ ধরাতো দূরের কথা ঠিকমতো জমি চাষ করতে পারিনা। যখন জমিতে পানির প্রয়োজন তখন দেখি জমিতে পানি থাকেনা। আবার যখন প্রয়োজন নেই অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে তখন তারা পানি নামায় না। কৃষকরা ভাবশালীদের কাছে জিম্মি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দোয়াইল্লার খালের দক্ষিণ পাশে রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং পশ্চিমে হারির খাল। খালের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে ঘের ও পুকুর তৈরি করা হয়েছে। এতে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকবাল আহম্মেদ বলেন, আমাদের মৌডুবীর দোয়াইল্লার খাল কিছু লোক তাদের দখলে রাখছে। খালটি দখলমুক্ত করার জন্য আমরা প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাল দখলমুক্ত করতে চান। এই খালটি যারা দখলে রাখছে আমরা তাদের নামের তালিকা করছি। ওই খালের আশপাশে প্রায় ৩০০ একর জমি আছে, কৃষকরা যাতে জমি চাষাবাদ করতে পারে আমরা সে ব্যবস্থা করব।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) সালেক মুহিদ বলেন, এরকম কিছু অভিযোগ পেয়েছি। সরকারি খাল দখলমুক্ত অভিযান অব্যাহত আছে। পর্যায়ক্রমে সরকারি সব খাল মুক্ত করা হবে।


leave a reply