মাদারীপুরে বদ্ধঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে মারা গেছে দুই শিশু। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় এলাকাবাসী শোকাতুর। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার উত্তর ঝিকরহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে পাওয়া যাচ্ছে না দুই শিশুর মা ও নানীকে। বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানায়, উত্তর ঝিকরহাটি গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা গোলাম মাওলা মাতুব্বরের মালিকানাধীন একতলা টিনসেড ঘরে আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পান এলাকাবাসী। পরে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন তারা।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত হন। কিন্তু আগুন নেভানোর আগেই পুড়ে মারা যায় এক বছরের শিশুটি। গুরুতর আহত অবস্থায় তিন বছর বসয়ী অপর শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়রা জানান, পারিবারিক কলহের জেরে প্রায়ই ঝগড়া ও মারামারি করতো স্বামী-স্ত্রী। দুই মাস আগে একটি মামলায় শিশু দু’টির বাবা মানিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপর থেকে জেলহাজতে রয়েছে সে। সকালে ঘরের বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে অন্যত্র চলে যায় শিশুদের মা ও নানী। এর পরপরই ঘটে এই আগুনের ঘটনা।
স্থানীয় বাসিন্দা বাদল মাতুব্বর বলেন, ‘খুটিনাটি বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুইজনেই মারামারি করতো। এলাকার লোকজন বেশ কয়েকবার বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছে। ঘরে কীভাবে আগুন লাগলো বুঝতে পারছি না। এই ঘটনার তদন্তপূর্বক দোষীদের বিচার দাবি করছি।’
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জাহিন আরেফিন জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসা শিশুর শরীরের ৯৫ ভাগই পুড়ে গেছে। নিয়ে আসার মাঝপথেই তার মৃত্যু হয়।
মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক নুর মোহাম্মদ জানান, ছয় মাস আগে গোলাম মাওলা মাতুব্বরের ঘর ভাড়া নেন শ্রীনদী এলাকার ভ্যানচালক মানিক বৈদ্য। শাশুড়ি, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে সেখানে থাকতেন তিনি। ঘটনার পর কাউকে পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক পর্যায়ে বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, ঘটনার পর নিহত দুই শিশুর মা ও নানী পলাতক রয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আলামত হিসেবে বেশকিছু মালামাল জব্দ করা হয়েছে।