বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ভেঙে পরিচালক পদে জুনিয়র শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে দু’টি দপ্তর চালাচ্ছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দপ্তর দু’টি হলো ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা এবং বহিরাঙ্গণ কার্যক্রম।
আইন অনুযায়ী এসব পদে যোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগের জন্য নির্দেশনা থাকলেও এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে মিথ্যা তথ্যও দিয়েছে বেরোবি প্রশাসন। সম্প্রতি ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে অবৈধভাবে রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেয়ার পর জুনিয়র শিক্ষকদের পরিচালক হিসেবে নিয়োগের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন-২০০৯ এর ৩৯(২) ধারার সংবিধির ধারা-১৫ অনুযায়ী বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক ভাইস-চ্যান্সেলরের সুপারিশক্রমে শিক্ষা প্রশাসনে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ন্যূনতম সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার শিক্ষকদের মধ্য থেকে দুই বছরের জন্য নিয়োগ দিতে হবে।
কিন্তু আইনের তোয়াক্কা না করে রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুজ্জামান খানকে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক এবং লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ চৌধুরীকে বহিরাঙ্গন কার্যক্রমের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৯ জন অধ্যাপক ও ৬২ জন সহযোগী অধ্যাপক কর্মরত আছেন।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পূর্ববর্তী উপাচার্যগণের দায়িত্বকালে অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপকের সংখ্যা কম থাকায় কোনো কোনো পরিচালক পদে সহকারী অধ্যাপকগণের মধ্যে কাউকে পরিচালক কিংবা সমপদে নিয়োগ দেয়া হতো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৫ বছরে পর্যাপ্ত যোগ্য শিক্ষক থাকার পরেও বর্তমান উপাচার্য আইন ভঙ্গ করে অনুগত জুনিয়র শিক্ষকদের এসব পদে বসিয়েছেন।
বর্তমান উপাচার্য যোগদানের পর ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর ছাত্র পরামর্শ দপ্তরে রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুজ্জামান খানকে এবং ২৮ সেপ্টেম্বর লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ চৌধুরীকে বহিরাঙ্গণ কার্যক্রমের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পরে ইউজিসি থেকে আইন অনুযায়ী পরিচালক পদসমূহে নিয়োগের নির্দেশনা দেয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আইন অনুযায়ী এসব পদে সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
আইন বহির্ভুতভাবে জুনিয়র শিক্ষক হয়ে পরিচালক পদে নিয়োগ পাওয়া কতটা নৈতিক? এমন পশ্নের জবাবে সাব্বীর চৌধুরী বলেন, ‘আমাকে স্থায়ী বহিরাঙ্গন পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়নি, আমি চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত। যেকোনো সময় এ দায়িত্ব পরিবর্তন হতে পারে।’
রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মাদ আলমগীর চৌধরী বলেন, এখানে নিয়মবহির্ভূত কিছু দেখছিনা, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক উপাচার্য চাইলে সবই করতে পারেন।