কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে হরতাল ও অবরোধের কারণে বাস চলাচল কমিয়ে আনা হয়েছে। এছাড়াও ছুটির দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তর বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে। তবে ছুটির দিনে বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও বিয়ে বাড়িতে দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের ছেলের বিয়েতে বাস ব্যবহার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক সকল নিয়ম মেনেই বাস নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) কুষ্টিয়া ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদের সামনে রাখা হয় বাস দুটি। ভেড়ামারা অডিটোরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাহন কুষ্টিয়া-স ১১-০০০৯ ও বিজয়-৭১ কুষ্টিয়া- স ১১-০০০৮ দুটি বাস ব্যবহার করা হয়েছে বিয়ের জন্য।
স্থানীয়রা জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় লেখা দুটি বাসে বরযাত্রীরা আসেন। ঘটনার সত্যতা জানতে বিয়ে বাড়ির একাধিক লোকজনের সাথে কথা হলে তারাও বিষয়টি স্বীকার করেন। গাড়ির চালকরাও এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, হরতাল অবরোধের কারণ দেখিয়ে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ বাস দেয়া হয় না। ছুটির দিন ক্যাম্পাসের বাস না থাকায় লাইনের বাসে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদাহ যাতায়াত করতে হয়। হরতালে শিক্ষার্থীদের বাস না দিয়ে রেজিস্ট্রারের ছেলের বিয়েতে বাস দেয়া কতটুকু যুক্তিসঙ্গত সে প্রশ্ন তুলেন শিক্ষার্থীরা। বন্ধের দিন বিয়ে বাড়িতে বাস যেতে পারলে শিক্ষার্থীদের জন্য কয়েকটি বাস দেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তারা।
এ বিষয়ে ইবির রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান জানান, আমি ভিসি স্যারের অনুমতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ভাড়া কর্তনের বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িটি ভাড়া নিয়েছি। আর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি ভাড়া নেওয়ার অনুমতি রয়েছে। হরতালের কারণে পুলিশ প্রশাসনের কাছে দরখাস্ত করেছিলাম, তাদের আশ্বস্ত করার পরেই গাড়ি নিয়েছিলাম। আমাদের সাথে কোনও পুলিশ না থাকলেও রাস্তায় পেট্রোল পুলিশ আমাদের নিরাপত্তা দিয়েছিল।
এবিষয়ে ইবির পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, রেজিস্ট্রার আমাদের আশস্ত করে বলেছিলেন যে তিনি পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলে গাড়ি নিবেন। তবে আমরা আপত্তি করে বলেছিলাম হরতাল অবরোধের মধ্যে আমরা গাড়ি দিচ্ছি না। তবে তিনি যদি পুলিশ প্রটেকশন মেনে গাড়ি নেন তখনতো আমাদের আর কিছু করার থাকে না। তিনি আমাদের বলেছেন যে তিনি যদি গাড়ি নেন পুলিশ প্রটেকশন মেনেই নিবে। আর আমাদের বিধিমালা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নির্দিষ্ট ভাড়া পরিশোধ করে গাড়ি নিতে পারবেন।
এ বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, পরিবহনের বাস ব্যবহারের এই আইনটা আমার জানা নেই। বাস ব্যবহারের বিষয়ে পরিবহন প্রশাসক ভালো বলতে পারবেন। তবে একটা নিয়ম আছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা নির্দিষ্ট অর্থ পরিশোধ করে একটি পরিবহন ব্যবহার করতে পারবেন।