বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস এবং বর্বরতা আবার যেন ফিরে না আসে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সেই বর্বরতার কথা দেশবাসী যেন ভুলে না যায়।
রোববার জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ: বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের খন্ডচিত্র’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমার শুধু একটাই আহ্বান থাকবে দেশবাসীর কাছে । বিএনপি জামায়াত রাজনীতি করতে চাইলে সুস্থ রাজনীতি করুক, আমার আপত্তি নাই। কিন্তু আমার এই সাধারণ মানুষের গায়ে কেউ হাত দিলে তাদের রক্ষা নাই।’
অনুষ্ঠানে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে আন্দোলনের নামে দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াত চক্রের নৈরাজ্য ও সহিংসতায় পাঁচশ’ মানুষ নিহত এবং প্রায় তিন হাজার ৬০০ জনেরও বেশি আহত হয়। সে সময় আগুন সন্ত্রাসের ভুক্তভোগীরা জাতীয় জাদুঘরে তাদের দুর্ভোগের কথা বলতে এসেছিলেন।
আগুন সন্ত্রাসীদের বিচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এদের বিচার হচ্ছে, হবে এবং মহান আল্লাহর তরফ থেকেই হবে। হয়তো প্রত্যেক মামলায় বিচার চলছেনা । কিন্তু যারা এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাসে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, অনেকের বিচারের কাজ চলছে, অনেকে শাস্তিও পাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও পাবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা হুকুমদাতা তাদের কথাও আপনারা ভেবে দেখেন। যারা এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারে আর মানুষকে কষ্ট দিতে পারে, আমি জানিনা মানুষ কীভাবে আবার এদের পাশে দাঁড়ায়, এদের সমর্থন করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা যেন কেউ ভবিষ্যতে আর ঘটাতে না পারে। কেননা, দল মত নির্বিশেষে এদেশের প্রতিটি মানুষেরই স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার রয়েছে। স্বাধীনভাবে নিজ নিজ জীবন-জীবিকার অধিকার রয়েছে। প্রত্যেকের সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার রয়েছে। সেই অধিকার সংরক্ষণ করাটাই আমাদের দায়িত্ব। আর সেটাই চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায় এবং একাত্তরের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো ধর্ষণসহ অমানবিক নির্যাতন চালায়।
নিজেকে স্বজনহারা উল্লেখ করে ভুক্তভোগীদের পাশে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী, তাদের বুকে টেনে নেন। এসময় ভুক্তভোগীদের হৃদয় বিদারক অভিজ্ঞতা শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ভুক্তভোগীদের জন্য সবরকম সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথাও মনে করিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মন্ত্রী পরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং ক’টনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর।
আলোচনা শেষে ‘আগুন সন্ত্রাসের দুর্ভোগ: বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি-সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের আংশিক দৃশ্যপট’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।