গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে শুধু জ্বর এবং গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ পাওয়া যায়। এর বাইরে আর কোনও ওষুধ প্রতিষ্ঠানটি থেকে পাওয়া যায় না।
তাই নিয়মিত জরুরি চিকিৎসা সেবা থেকে বলতে গেলে বঞ্চিত হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ হাজার শিক্ষার্থী। জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদেরকে বাইরের ফার্মেসি থেকে বেশি টাকা খরচ করে প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত দুই থেকে তিন মাস যাবৎ জ্বর এবং গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিয়ে মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসা সেবা চলছে। ফলে জরুরি আর কোনও ধরনের চিকিৎসা সেবা নিতে পারছেন না তারা। তাদের অভিযোগ, শিক্ষার্থীরা মাসের অধিকাংশ দিন নানান ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় ভোগেন। ফলে তাদেরকে মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়। কিন্তু মেডিক্যাল সেন্টারে গেলে জ্বর এবং গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ ছাড়া অন্য কোনও ওষুধ পাওয়া যায় না৷ বাধ্য হয়ে বাইরের ফার্মেসি থেকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ওষুধ কিনতে হচ্ছে তাদের।
মেডিকেল সেন্টারের দুরবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হ্যাপি বাগচি। বলেন, গত মাসে মাসে আমিসহ আমার সহপাঠীরা বেশ কয়েকবার মেডিক্যাল সেন্টারে যাই। কিন্তু প্রতিবারই এইস এবং এন্টাসিড ছারা অন্য কোনও ওষুধ পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, মেডিক্যাল সেন্টার থেকে যে ওষুধ নিয়েছে সবাইকে একই ওষুধ দেওয়া হয়।
মেডিক্যাল সেন্টারে প্রয়োজনীয় ওষুধ না থাকার বিষয়ে মেডিক্যাল অফিসার লিখন চন্দ্র বালা বলেন, আমরা মাত্র দু’জন চিকিৎসক ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে সেবা দিচ্ছি। এটি আমাদের জন্য খুবই কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। মেডিক্যাল সেন্টারে গত দুই মাস যাবৎ এইস, এলাক্ট্রল এবং এন্টাসিড দিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা লাগছে। আমরা গত ১৮ জানুয়ারি জরুরি ভিত্তিতে নতুন ওষুধ ক্রয় করার জন্য ক্রয় কমিটির সভাপতি বরাবর চিঠি দিয়েছি কিন্তু এতে কোনও ফলাফল আসেনি। এরপর পাঁচ ফেব্রুয়ারি আবার চিঠি দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা দু’জন চিকিৎসক শিক্ষার্থীদের যথোপযুক্ত চিকিৎসা সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি কিন্তু প্রয়োজনীয় ওষুধ না থাকায় পর্যাপ্ত সেবা দেওয়া যায় না। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদেরকে বকাবকি করেন এবং মাঝে মাঝে মেডিক্যাল স্টাফদের সাথে অশোভন আচরণও করেন।
ওষুধ কিনতে বিলম্ব করার কারণ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার এবং ওষুধ ক্রয় কমিটির সভাপতি অভিষেক বিশ্বাস বলেন, মেডিকেল সেন্টার থেকে ওষুধ কেনার জন্য অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু আমি চাইলে ওষুধ কিনতে পারিনা। এজন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়৷ প্রথমে ওষুধ ক্রয়ের জন্য পরিকল্পনা দপ্তর থেকে পরিকল্পনা করা হয়৷ তারপর ভিসি স্যার অনুমতি দিলে ওষুধ কেনা হয়৷
তিনি আরও বলেন, ওষুধ ক্রয় কমিটির সাথে পরিকল্পনা দপ্তর যুক্ত। পরিকল্পনা দপ্তরের পরিকল্পনা অনুযায়ী ওষুধ কিনতে হয়।
মেডিকেল সেন্টারে ওষুধ নেই, বিষয়টি উপাচার্য জানেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্যারকে জানানো হয়েছে। স্যার অনুমতি দিলে ওষুধ কেনা হবে।