বগুড়ায় টিসিবির পণ্য নিয়ে চলছে তামাশা

বগুড়ার শিবগঞ্জে টিসিবির পণ্য বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কার্ড ফেরত নিয়ে অন্যদের দেয়া হয়েছে টিসিবি কার্ড। প্রতিবার বিতরণের পর এসব কার্ড ফেরত নিয়ে অন্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হয় প্রকৃত কার্ডধারীদের। সুবিধাভোগীরা বলতেও পারেন না কার্ড বদল হওয়ার কারণ।

শুক্রবার সকাল থেকে মোকামতলা ইউনিয়নে রমজান উপলক্ষে টিসিবির পণ্য বিতরণে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। মোকামতলা ইউনিয়ন পরিষদ চত্তরে গেলে দেখা যায় টিসিবি পণ্য নিতে আসা বিভিন্ন এলাকার নারী পুরুষরা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের হাতে থাকা টিসিবি কার্ডের নামের সাথে তাদের নাম ঠিকানার কোনও মিল নেই। এছাড়া টিসিবির কার্ডে নাম থাকা ব্যক্তিরা জানান, তাদের কার্ড ফেরত নেয়া হয়েছে। সেসব কার্ড অন্য ব্যক্তিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ফলো তারা কয়েকমাস ধরে টিসিবির পণ্য পাচ্ছেন না।

টিসিবির পণ্য নিতে আসা চাকলমা গ্রামের লিওন মিয়া জানান, আমার হাতে থাকা কার্ডটি আমার নয়। রফিকুল নামের এক ব্যক্তির নাম লেখা আছে কার্ডে।

মুরাদপুর গ্রামের বেলাল হোসেন নামের টিসিবি পণ্য নিতে আসা ব্যক্তির হাতে লক্ষিপুর গ্রামের আসমা বেগম নামের এক ব্যক্তির কার্ড দেখা যায়।
এসময় বেলাল হোসেন জানান, আসমা বেগমকে চিনি না। এই কার্ড আমার নয়। আমার মতো সবার কাছেই এমন অবস্থা।

শংকরপুর গ্রামের রশিদুল নামের এক যুবকের হাতে আশরাফুল ইসলাম প্রামানিক নামে এক ব্যক্তির কার্ড, উজ্জ্বল হোসেন নামের এক যুবকের হাতে মমতা বেগম নামের এক নারীর কার্ডসহ প্রায় সকলের হাতেই অন্য মানুষের কার্ড দেখা যায়।

এ অবস্থায় টিসিবি পণ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিতরা ক্ষোভ জানিয়েছেন। কাশিপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের মর্জিনা বেগম নামের এক নারী জানান, আমি টিসিবির কার্ড পেয়েছিলাম। সেই কার্ডে আমার নাম ও ছবি ছিল। প্রথমবার টিসিবি পণ্য নিতে গেলে ইউনিয়ন পরিষদ সেই কার্ড ফেরত নিয়েছে। আমি অসহায় দরিদ্র মানুষ, আমার স্বামী প্রতিবন্ধি।

একই রকম বক্তব্য দিয়ে ঐ গ্রামের নাজিরা বেগম জানান, আমি স্বামী পরিত্যক্তা। আমার নামে টিসিবি কার্ড ছিল, সেই কার্ড ইউনিয়ন পরিষদ ফেরত নিয়েছে। এখন শুনছি আমার কার্ড দিয়ে অন্যরা টিসিবি পণ্য কিনছে। আমি আর টিসিবি পণ্য পাইনা।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, এই ইউনিয়নের টিসিবি কার্ডপ্রাপ্ত সিংহভাগ মানুষই টিসিবি পণ্য থেকে বঞ্চিত। তাদের কার্ড বর্তমানে তাদের হাতে নেই।

মোকামতলা ইউনিয়নে দায়িত্ব প্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার গোলাম রব্বানী জানান, চেয়ারম্যানরা কার্ড বিতরণ করেছেন, তারাই জমা নিয়েছেন। এসময় তার দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।

মোকামতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসান হাবিব সবুজের মুঠো ফোনে কয়েকবার কথা বলার চেষ্টা করা হলে তার ফোন ব্যস্ত পাওয়া যায়।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম সম্পা জানান, যদি কোন ধরনের অনিয়ম থাকে তাহলে আমরা সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

leave a reply