প্রায় ৩০০ আসন ফাঁকা রেখেই বেরোবিতে প্রথমবর্ষের ক্লাস শুরু

প্রায় ৩০০ আসন ফাঁকা রেখেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে। রোববার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২টি বিভাগে একযোগে ক্লাস শুরু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে মোট এক হাজার ১,৩৯৫টি আসন রয়েছে। তবে গত ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ১,১০৩ জন শিক্ষার্থী। ফলে ২২ বিভাগের মধ্যে ১৬টিতে এখনো ২৯২টি আসন ফাঁকা রয়েছে। এর মধ্যে বাংলা বিভাগে ৭৫ আসনের মধ্যে ১৬টি, ইংরেজি বিভাগে ৬৫ আসনের মধ্যে তিনটি,  ইতিহাস ও প্রত্নতত্ব বিভাগে ৭৫ আসনের ২০টি, সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ৬৫ আসনের ২০টি, জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৬৫ আসনের ৫৩টি।

এছাড়াও, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৫০টির মধ্যে ১৯টি, লোকপ্রশাসন বিভাগে ৬৫ আসনের ছয়টি, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ৬০টির মধ্যে পাঁচটি, মার্কেটিং বিভাগে ৬০টি আসনের পাঁচটি, ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগে ৬০টির মধ্যে একটি, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগের ৬০টির মধ্যে পাঁচটি, গণিত বিভাগে ৭০টি আসনের ৩৯টি, পরিসংখ্যান বিভাগের ৭০টির মধ্যে ৩৭টি, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৭০টির মধ্যে ২২টি, ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের ৬০টির মধ্যে ১৯টি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগে ৬০টির মধ্যে ফাঁকা রয়েছে ২২টি আসন।

বিভাগগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্লাস শুরুর দিনেও ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগ অনুপস্থিত ছিলেন। গুটিকয়েক বিভাগ ছাড়া ক্লাস শুরু হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ না করা এবং নানা অব্যবস্থাপনার কারণে অসন্তোষ জানিয়েছেন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ও তাদের সাথে আসা অভিভাবকরা।

অনেক শিক্ষার্থী নিজ নিজ বিভাগের সামনে দুই-তিন ঘন্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন। প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হওয়ার দিনেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়নি বেরোবি ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকেই।

শিক্ষার্থীদের সাথে আসা একাধিক অভিভাবক জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিনেই এমন অব্যবস্থাপনা সত্যিই দৃষ্টিকটু দেখায়। আমরা এটা আশা করিনি।

এদিকে, নতুন বছরের ক্লাস শুরুর দিন ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: হাসিবুর রশীদ। এমনকি কাউকে উপাচার্যের দায়িত্ব দিয়েও যাননি তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর চৌধুরীও ছিলেন না ক্যাম্পাসে।

রোববার দুপুর দু’টার দিকে উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারের দপ্তরে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, উপাচার্য প্রফেসর হাসিবুর রশীদ গত সপ্তাহ থেকে ঢাকায় অবস্থান করছেন এবং রেজিস্ট্রার দীর্ঘদিন যাবৎ ছুটিতে আছেন। গত ২৮ তারিখে ছুটি শেষ হলেও রেজিস্ট্রার রোববার দুপুর দু’টা পর্যন্ত অফিসে আসেননি।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে উপাচার্য প্রফেসর হাসিবুর রশীদ বলেন, আমি জরুরি কাজে ঢাকায় অবস্থান করছি। কাজ শেষে ফিরবো। প্রথমবর্ষের ক্লাস শুরুর অব্যবস্থাপনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জনসংযোগ দপ্তরে কথা বলার পরামর্শ দেন।

প্রথমবর্ষে ক্লাস শুরুর দিনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অব্যবস্থাপনা বিষয়ে জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়া চলার পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক ক্লাস শুরু করা হলো। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হলে কেন্দ্রিয়ভাবে নবীন বরণ অনুষ্ঠান করা হবে।

বেরোবিতে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে এমন প্রচারের বিষয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বহিরাঙ্গণ কার্যক্রমের পরিচালক সাব্বীর আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমরা যে সময় এটা প্রচার করেছিলাম তখন শতভাগ ভর্তি ছিল কিন্তু পরে মাইগ্রেশন হয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গেছে।

leave a reply