পোশাক শ্রমিকদের চলমান অসন্তোষের মধ্যেই শ্রম অধিকার, জিএসপি প্লাস সুবিধাসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে আজ রোববার পাঁচ দিনের সফরে আসছে ইইউর প্রতিনিধিদল। এ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন ইইউর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা প্যাম্পালোনি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি গণমাধ্যমকে বলেন, শ্রম খাতের জন্য জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ‘অগ্রগতি পর্যালোচনা’ করার লক্ষ্যে এই সফর।
সূত্র জানিয়েছে, আগামী ১৫ নভেম্বর পররাষ্ট্রসচিব, বাণিজ্যসচিব ও শ্রমসচিবের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে প্রতিনিধিদলটির। এছাড়া ঢাকা সফরকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ইইউ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
এদিকে, ইইউ প্রতিনিধি দলটি এমন সময় বাংলাদেশ সফর করছে যখন সর্বনিম্ন মজুরি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধির দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের চলমান বিক্ষোভ চলমান রয়েছে। গত দুই সপ্তাহে এসব বিক্ষোভে তিনজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া প্রায় দুই ডজন মামলায় কয়েক হাজার শ্রমিককে আসামি করা হয়েছে।
শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিকে ভন্ডুল করতে ইতোমধ্যেই অনেক কারখানার মালিক ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ পথে হেঁটে গতকাল একশোরও বেশি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। নতুন নির্ধারিত সর্বনিম্ন সাড়ে ১২ হাজার মজুরি প্রত্যাখ্যান করে মজুরি আরও বাড়ানোর জন্য বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে কিছু শ্রমিক অধিকার গোষ্ঠী।
ঢাকায় পৌঁছার আগেই শ্রমিকদের বিরুদ্ধে পুলিশের হয়রানি ও সহিংসতার তদন্ত এবং শ্রমিকদের আন্দোলন ও ধর্মঘট কীভাবে শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারে, সে বিষয়ে শিল্প পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেয়াসহ জাতীয় কর্মপরিকল্পনার (এনএপি) বাস্তবায়নে বাংলাদেশের ধীর অগ্রগতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এভরিথিং বাট আর্মস (ইবিএ) রিভিউ মিশন।
বাংলাদেশ শ্রম খাতে একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২০২৬) গ্রহণ করেছে এবং এই পরিকল্পনাটি আইএলও গভর্নিং বডির কাছে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক উপস্থাপিত রোডম্যাপের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। রোডম্যাপের লক্ষ্য হলো সংগঠনের স্বাধীনতা এবং সম্মিলিত দরকষাকষির অধিকারসহ দেশের শ্রম অধিকারগুলো উন্নতি করা।