প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সফর ফলপ্রসূ হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকেল ৪টায় গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ব্রিকস সম্মেলনে যোগদান পরবর্তী এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফরটা অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার সময় আমাদের বাণিজ্যিক নানা পথ প্রশস্ত হয়েছে। সফরে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে দেখা হয়েছে আমার। তাদের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও একে অপরের সহযোগিতার বিষয়ে নানা আলোচনা হয়।
তিনি বলেন, আমি সেখানে বক্তৃতায় বলেছি, সব হুমকি ও যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। বিশ্বজুড়ে শান্তি ও নিরাপত্তার বিষয়ে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছি।
গত ২২ আগস্ট রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসার আমন্ত্রণে ১৫তম ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে জোহানেসবার্গে যান প্রধানমন্ত্রী।
দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়োজিত ১৫তম ঐতিহাসিক ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা যোগ দেয়। করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব এবং পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী বিধিনিষেধের পর এটিই ছিল প্রথম সশরীরে উপস্থিতির ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসা, চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দ্য সিলভা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ সম্মেলনে যোগ দেন।
২৩ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’-এ প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন। পরে তিনি আফ্রিকার দেশগুলোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ দূত সম্মেলনে’ যোগ দেন। তিনি হিলটন স্যান্ডটন হোটেলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ব্রিকসের বর্তমান চেয়ারম্যান ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজে যোগ দেন।
২৪ আগস্ট তিনি ৭০টি দেশের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-ফ্রেন্ডস অব ব্রিকস লিডারস ডায়ালগের (ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ এবং ব্রিকস প্লাস ডায়ালগ) সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে ভাষণ দেন।
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে গত বৃহস্পতিবার স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে শেখ হাসিনা ও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা ডা সিলভা, মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট ফিলিপে জ্যাকিন্টো নিউসি, তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট সাইমা সুল্লুহু ও ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। একই স্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট দিলমা ভানা রুসেফের মধ্যেও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলন শেষে রোববার (২৭ আগস্ট) সকালে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।