অবরোধ-হরতাল যারা ডেকেছে তারাই রাজধানীর তেজগাঁওয়ে কমলাপুরগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগিতে আগুন দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান।
তিনি আরও বলেন, নাশকতার উদ্দেশে যারা আগুন দিয়েছে তাদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। মঙ্গলবার দুপুরে রেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে (ঢামেক) গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমি মনে করি যারা অবরোধ-হরতাল দিচ্ছে, তারাই এই নাশকতার সঙ্গে জড়িত। এর আগেও তারা এভাবে ট্রেনে নাশকতা করেছিল। গাজীপুরে রেলের লাইন কেটে ফেলা হয়েছিল এবং একজনকে হত্যা করা হয়েছে।’
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘ট্রেনে আগুনের ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা আহত একজনকে পেয়েছি যিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার কাছে যতটুকু জানা গেছে, ট্রেনের ভেতর যারা ছিল তারাই আগুন দিয়েছে। তিনি দেখেছেন সিটের ভেতরে প্রথমে আগুন দেওয়া হয়েছে। সেই আগুন ধীরে ধীরে ছড়িয়ে ধোঁয়ায় চারদিক আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এ সময় যাত্রীরা যে যেদিকে পারে ছোটাছুটি করতে থাকে। কেউ জানালা দিয়ে কেউবা দরজা দিয়ে লাফিয়ে বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করে। ঘটনার সময় ভোর থাকায় অনেক যাত্রী ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। একজন মা নাদিরা আক্তার পপি তিন বছরের শিশু সন্তানকে জড়িয়ে ধরে ছিলেন। মা ও সন্তান উভয়ই বাঁচার চেষ্টা করছিল।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, মরদেহের পোস্টমর্টেম দরকার হবে না। কারণ প্রত্যক্ষভাবে জানা গেছে- তারা আগুন পুড়ে মারা গেছে। এটি যেহেতু রেলওয়ের বিষয় কমলাপুর রেলওয়ে থানায় এটির বিষয়ে মামলা হবে।
তিনি বলেন, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কোনও অবস্থাতেই ছাড় পাবে না। অতীতেও ছাড় পায়নি। বাস-ট্রেনে জ্বালাও পোড়াওয়ের প্রত্যেকটি ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা স্বীকারোক্তি দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে ও রাজনীতি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তারা এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছে।
দেশ থেকে এ ধরনের নির্দেশনা নাকি দেশের বাইরে থেকে আসছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যারা হরতাল-অবরোধ দিচ্ছে, জ্বালাও-পোড়াও করছে, যারা নাশকতা করছে তাদের বিদেশি নেতাদের দেশীয় এজেন্ট-অনুসারীদের দিয়ে এসব কাজা করানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাকি দুজনের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে। তাদের পরিচয় অচিরেই পাওয়া সম্ভব হবে। এরপর নিহতের আত্মীয়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে মরদেহ।