চীন-মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বৈঠক, সম্পর্ক স্থিতিশীল চায় আমেরিকা

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। রোববার অনুষ্ঠিত এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দেশ দুটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মাঝে ‘খোলামেলা’ আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বৈঠকটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হলো যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে। সোমবার (১৯ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন চীনে কর্মকর্তাদের সাথে দুই দিনের বৈঠকের শুরুতে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ‘খোলামেলা’ আলোচনা করেছেন বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে। বৈঠকে ব্লিংকেন কূটনীতি এবং ‘যোগাযোগের খোলা চ্যানেল’ রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন বলেও একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

বিবিসি বলছে, গেলো পাঁচ বছরের মধ্যে চীনে কোনো শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিকের এটিই প্রথম সফর। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাইডেন সরকার ক্ষমতায় আসার পর অ্যান্টনি ব্লিংকেনই সবচেয়ে সিনিয়র নেতা যিনি চীন সফর করছেন।

অবশ্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরটি আরও পাঁচ মাস আগেই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় একটি সন্দেহভাজন চীনা গুপ্তচর বেলুন উড়ে যাওয়ার পর অ্যান্টনি ব্লিংকেন সেসময় সফর স্থগিত করেন।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, বেইজিং আলোচনার মূল লক্ষ্য হচ্ছে উভয় দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ককে স্থিতিশীল করা।

চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে বলেছেন- যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্থিতিশীল, পূর্বাভাসযোগ্য এবং গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বেইজিং। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আলোচনায় তিনি ওয়াশিংটন সফরে সম্মত হয়েছেন।

কিন বলেছেন, চীন-মার্কিন সম্পর্কের জন্য তাইওয়ান হচ্ছে ‘সবচেয়ে বড় ঝুঁকি’। একইসঙ্গে তাইওয়ান ইস্যুটিকে ‘চীনের প্রধান স্বার্থগুলোর একটি’ হিসেবেও তিনি উল্লেখ করেছেন বলে রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানিয়েছে।

মূলত চীন স্ব-শাসিত তাইওয়ানকে একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসেবে দেখে যা শেষ পর্যন্ত বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তবে তাইওয়ান তার নিজস্ব সংবিধান এবং নেতাদের সাথে চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে নিজেকে আলাদা হিসাবে মনে করে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত বছর বলেছিলেন, চীন আক্রমণ চালালে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষা করবে। সেসময় বাইডেনের সেই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছিল বেইজিং।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সিসিটিভি জানিয়েছে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনকে বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরুর পর কূটনৈতিক দিক থেকে এতটা খারাপ অবস্থা কখনও হয়নি। এর ফলে দুই দেশের সাধারণ মানুষের মৌলিক স্বার্থ রক্ষা করা যাচ্ছে না, আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রত্যাশাও পূরণ হচ্ছে না।

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী হুয়া চুনইং টুইট করে বলেছেন, ‘আশা করছি, এই আলোচনার ফলে দুই দেশের সম্পর্ক আবার পুরোনো জায়গায় ফিরবে। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে দুই দেশের প্রেসিডেন্ট এই আশাই করেছিলেন।’

তবে আলোচনা শেষে অ্যান্টনি ব্লিংকেন বা কিন গ্যাং এই দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কেউই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি।

leave a reply