বাংলাদেশ দল হেরেছে, কিন্তু লড়েছে। শক্তিশালী দল কুয়েতের বিপক্ষে জিততে না পারলেও লড়াই করে হারার মাঝেও সান্ত্বনা থাকে। আজ বাংলাদেশ দলের সবাই এই সান্ত্বনা নিয়েই মাঠ ছেড়েছে। সাফ ফুটবলের সেমিফাইনালে কুয়েতের কাছে ১-০ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ।
নির্ধারিত সময়ের মাঠের লড়াইয়ে কুয়েতের সাথে পাল্লা দিয়ে লড়েছে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা। এরপর খেলা গড়িয়েছে অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গোল খেয়েছে আনিসুররা। তবে ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময় চীনের প্রাচীরের মত গোল পোস্ট আগলে রেখেছেন গোলকিপার আনিসুর।
কুয়েতের পক্ষে রাইট-ব্যাক আবদুল্লাহ আল ব্লাউসি করেছেন ম্যাচের একমাত্র গোলটি। তার শটটি বাংলাদেশের সেন্টার-ব্যাক তপু বর্মণের দুই পায়ের ফাঁক গলে জালে জড়িয়েছে।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবার অতিথি দল হয়ে খেলতে এসে কুয়েত উঠে গেছে ফাইনালে। আজকের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারত-লেবানন ম্যাচের জয়ী দলের সাথে ৪ জুলাই ফাইনাল খেলবে কুয়েত।
আজ সেমিফাইনালে বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের চেয়ে ৫১ ধাপ এগিয়ে থাকা দলকে আটকে রেখে কুয়েতের পর্তুগিজ কোচ রুই ফার্নান্দো বেন্তোর কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বাংলাদেশের ফুটবলাররা। ম্যাচের ৩১ মিনিটেই তিনি রক্ষণে দাস্তিকে মাঠে পাঠান। বিরতির পর মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মাঠে আসেন। ৫৩ মিনিটে আসেন আল খালদি। ৬১ মিনিটে সালেহও আসেন মাঠে। তিন বড় অস্ত্রকে একাদশে রাখেননি কোচ। তবে প্রয়োজনে তাদের ব্যবহার করেও কুয়েত গোল পাচ্ছিল না। কিছুটা আফসোস তাদের হয়তো থাকবে শুরুর দিকে কর্নার থেকে ১-০ না হওয়ায়। গোললাইন থেকে সেবার দারুণ সেভ করেন বাংলাদেশ দলের লেফট-ব্যাক ইসা ফয়সাল।
বাংলাদেশের রক্ষণ গোল খাওয়ার আগ পর্যন্ত দারুণ খেলেছে। চোটের কারণে ভুটান ম্যাচে খেলতে না পারা তারিক কাজী ফিরেছেন আজকে। রক্ষণে তিনিও আজ আস্থার প্রতীক হয়ে ছিলেন। সবচেয়ে বড় আস্থা ছিলেন গোলকিপার আনিসুর। ৩০ মিনিটে কুয়েতের আল রশিদির শট আটকেছেন তিনি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে আরেকবার বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছেন।। প্রথমার্ধে দুইবার কুয়েতের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান বাংলাদেশের গোলকিপার। দ্বিতীয়ার্ধের ৬১ মিনিটে আনিসুর আটকে দেন কুয়েতের ফ্রি-কিক। এরপর আরও একটি আক্রমণ রুখে দেন আনিসুর।
দ্বিতীয়ার্ধে বলতে গেলে একাই বাংলাদেশকে ম্যাচে রাখেন আনিসুর।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথম দশ মিনিটের মধ্যে কুয়েতের আরও দুটি আক্রমণ ভেস্তে দেন আনিসুর। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না রক্ষণের ক্ষণিকের ভুলে। বাংলাদেশ শুধু গোল আটকেছে, এটুকু বললে ম্যাচে আসল ছবিটা ফুটে ওঠে না। ম্যাচের সহজতম সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশই। সেটিও দ্বিতীয় মিনিটেই। ডান দিক থেকে রাকিব বক্সে ঢুকে বল দেন মোরছালিনকে। সামনে শুধু গোলকিপার। ঠিকঠাক প্লেসিং করতে পারলেই গোল হতে পারত। মোরছালিনের শটটি লেগেছিল কুয়েতের গোলকিপার মারজুকের গায়ে। প্রথমার্ধে এটিই সবচেয়ে সহজ সুযোগ। ৫৪ মিনিটে উইঙ্গার রাকিবের শট অল্পের জন্য গোল পোস্টের বাইরে যায়। ৬১ মিনিটে মোরছালিন-রাকিব সমন্বয়ের তৈরি হয়েছিল গোলের আরেকটি সুযোগ। ভুটান ম্যাচ থেকে যে কোন থেকে গোল করেছিলেন রাকিব, আজ তার চেয়ে একটু সহজ কোন থেকে তার শট লাগে গোল বারে। দ্বিতীয়ার্ধে এটিই বাংলাদেশের সহজ সুযোগ ছিল।
৬৭ মিনিটে স্ট্রেচারে শুয়ে মাঠ ছাড়া অধিনায়ক জামালের জায়গায় আসেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। ফয়সালের ক্রস থেকে হেডটা ঠিকঠাক করতে পারেনি রাকিব। গোল খাওয়ার আগে মাঠে আসেন ইব্রাহিম ও মজিবর। গোলের পর রবিউল, রহমত, সুমন রেজা। ১-১ করার সুযোগও আসে। কিন্তু সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারা।