ক্রিকেটের বিশ্বায়ন ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ওয়ানডে ক্রিকেট ধীরে ধীরে প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে বলে অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। বিশেষ করে বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের পরিমাণ বাড়ার ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচি অনেকটাই আঁটসাঁট হয়ে এসেছে। আবার এর প্রভাব পড়ছে ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রাচীন ও কুলীন সংস্করণ টেস্ট ক্রিকেটেও। সেই লক্ষ্য ২০২৭ সালের বিশ্বকাপের পর ‘ছেলেদের ওয়ানডে’ ক্রিকেট কমিয়ে নিয়ে আসার সুপারিশ করেছে ক্রিকেটের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব-এমসিসি।
ক্রিকেটের বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করতে অ্যাশেজের দ্বিতীয় টেস্টের আগে বৈঠকে বসেছিলো এমসিসির ক্রিকেট কমিটি। মঙ্গলবার এমসিসি এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়, এমসিসির বর্তমান ক্রিকেট কমিটি ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাইরে ৫০ ওভারের ক্রিকেটের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এর পরিধি কমিয়ে আনা হলে, এটির মান আরও বাড়বে। সেজন্য দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ বন্ধ করারও সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এমসিসি মনে করে, প্রতিটি ওয়ানডে বিশ্বকাপের বছর দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এমসিসির বর্তমান ক্রিকেট কমিটির সভাপতি ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইক গ্যাটিং। এ কমিটিতে আছেন ক্রিকেটের বেশ কয়েকজন বড় নাম—কুমার সাঙ্গাকারা, সৌরভ গাঙ্গুলী, হিদার নাইট, রমিজ রাজা, জাস্টিন ল্যাঙ্গার, ঝুলন গোস্বামী ও এউইন মরগান। এমসিসির সভাপতি মাইক গ্যাটিং বলেছেন, ‘সময় এসেছে ক্রিকেটের অনেক কিছুই নতুনভাবে গড়ে তোলার।’ বৈঠকে টেস্ট ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি ও ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কৌশলগত তহবিল গঠনের সুপারিশ করেছে এমসিসির ক্রিকেট কমিটি। পাশাপাশি নারী ক্রিকেটেরও তহবিল বাড়ানোর কথাও বলছে তারা।
গত বছর ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন বেন স্টোকসের মতো ক্রিকেটার। ওয়াসিম আকরাম, রবি শাস্ত্রী থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজন সাবেক তারকা ক্রিকেটার দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ কমিয়ে ফেলা বা বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। ঠাঁসা সূচি ও ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের কারণে প্রায় সারা বছরই ব্যস্ত থাকেন ক্রিকেটাররা। ফলে ক্রিকেটারদের ওপর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সূচির চাপ কমাতেই এমন সুপারিশ করলেন এমসিসির ক্রিকেট কমিটি।