ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল আবাসিক হল প্রাঙ্গনে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের পর জাতীয় সংগীত পরিবেশন, পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর কেক কাটা ও বেলুন উড়ানোর পর আলোচনা সভা, বিতর্ক প্রতিযোগিতায়, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়েছে। শেষে শেখ রাসেলের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া করা হয়।
আলোচনা সভায় শেখ রাসেল দিবস কমিটির আহ্বায়ক ও প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ইবি’র ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ. এম আলী হাসান।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন থিওলজি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এরশাদ উল্লাহ, প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত, সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পর্যায়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থীবৃন্দ ও ইবি ল্যাবরোটরী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
সভায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জয় বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর পরিবারের যে মানুষটির সবচেয়ে নির্ভরযোগ্যতা প্রতীক হওয়ার কথা ছিল সেই মানুষটি হচ্ছেন শেখ রাসেল। ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট ঘাতকের বুলেট বুলেট তাকে হত্যা না করলে আজ এই বৃদ্ধ বয়সে এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চিন্তে তাকে দেশ পরিচালনার ভার দিতে পারতেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা জাতির একটি অমূল্য সম্পদ হারিয়েছি।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘বাংলাদেশে আজ সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আর সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরাধিকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তরিত হচ্ছে। দেশের অবকাঠামোগত ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ যখন আজ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক সেই মুহূর্তে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমাদের এসব থেকে সতর্ক থাকতে হবে।’
এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আজকে শেখ রাসেল দিবসে একটাই প্রশ্ন আমার, শেখ রাসেল তো শিশু ছিল, তাকে কেন হত্যা করা হলো। এর কারণ যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল তারা চেয়েছিল শেখ পরিবারের কেও যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে। তারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে মেরে ফেলেছিল।তারপর ১৯৯৬ সালে যখন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ দিতে শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুর দেখা উন্নয়নকে আজকে রূপ দিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন আজ দেশরত্নের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হতে পারলেই কেবল শেখ রাসেলের আত্না শান্তি পাবে।’
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘শেখ পরিবারের আকাশে উদিত পাঁচটি তারার মধ্যে ধ্রুবতারা ছিল বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেল। অল্প বয়সেই তার মধ্যে চারিত্রিক মাধুর্যতা ও বিনয়ীভাব ছিল যা তাকে অন্য আর দশটা শিশুদের থেকে অনন্য করেছিল। শেখ রাসেলকে পরবর্তীতে দেশ পরিচালনার নেতৃত্বে উপযোগী করে গড়ে তোলা হচ্ছিল বিভিন্ন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে। ছোটবেলা থেকেই রাসেল ছিলো শান্ত ও ধীরস্থির স্বভাবের।’
তিনি উপস্থিত ইবি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের কোমলমতী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা নিজেকে শেখ রাসেলের মতো করে গড়ে তোলো কারণ তোমরাই ভবিষ্যতে দেশকে নেতৃত্ব দেবে।