সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হচ্ছে বইমেলা ও বঙ্গ সাংস্কৃতিক উৎসব। শুক্রবার বিকেল চারটায় বাংলাদেশ কনসুলেট প্রাঙ্গণে উদ্বোধন হবে তিন দিনব্যাপী এই উৎসবের। এর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাই ও উত্তর আমিরাত।
মেলার উদ্বোধন করবেন প্রখ্যাত কবি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব কবি কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু জাফর। প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সম্মানীত অতিথি থাকবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মোহাম্মদ নুরুল হুদা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বর্ণাঢ্য করে তোলার জন্য নেওয়া হয়েছে ভিন্নধর্মী আয়োজন। এরইমধ্যে শেষ হয়েছে সব ধরনের প্রস্তুতি। বইমেলা নিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। প্রবাসীদের নিয়ে প্রথমবারের মত আয়োজিত এই বইমেলা ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
মেলায় বৈচিত্র আনতে একটি সৃজনশীল টিম অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। সাংস্কৃতিক আয়োজনকে মনমুগ্ধকর করে তোলার জন্য বাংলাদেশি ও পশ্চিম বাংলার শিল্পীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএই’র সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান জনি বলেন, বই মেলাকে ঘিরে আমিরাতে প্রবাসীদের আগ্রহের কমতি নেই। আমরা যারা প্রবাসী আছি, প্রবাসে থেকেও যে সাহিত্যচর্চা করা যায় ও বাংলা বাংলা ভাষা চর্চা করা যায়, সাহিত্যের যে শাখাগুলো আছে সেখানে বিচরণ করা যায়, তার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই বইমেলার মাধ্যমে প্রবাসীদের এক মাইলফলক যোগ হবে। এতে করে প্রবাসীরা বই লিখতে ও পড়তে আরও বেশি উৎসাহিত হবেন। ভবিষ্যতে প্রবাস থেকে ভালো ভালো উঠে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।
বৃহওর ফরিদপুর সমিতি সভাপতি মুকুল আহমেদ জানান, আমরা যারা দেশের বাইরে আছি এবং দেশের সেই গল্প উপন্যাস পড়াটা সব সময় মিস করি। আশা করি এই বইমেলা মাধ্যমে আমাদের সেই মনের খোরাক মিটবে। কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন এই অভুতপূর্ব আয়োজন দুবাই ও উত্তর আমিরাতসহ পুরো সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাহিত্য ক্ষুধা মিটাবে বলে আমার বিশ্বাস।’
দুবাইয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন জানান, কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে এই প্রথম তিন দিনব্যাপী বইমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। আমাদের উদ্দেশ্য মানসম্পন্ন লেখকদের তুলে আনা এবং পাঠকদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করা। আমরা ইতোমধ্যে প্রবাসীদের থেকে সন্তোষজনক সাড়া পেয়েছি। আগামীতে এই মেলা আরও বড় পরিসরে আয়োজন করব। প্রতি বছর নভেম্বর মাসে বইমেলার আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’
তিনদিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে সেমিনারে কবি সাহিত্যিকরা অংশগ্রহণ করবেন। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের উড়িষ্যা, আসাম, আরব আমিরাতের কবি সাহিত্যিকরা অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়াও ব্রিটেন থেকে দু’জন ব্রিটিশ লেখক ও দু’জন কবি অংশ নেবেন।
মেলায় শুরুতে ৫০ টি স্টল বরাদ্দ করার কথা ছিল। কিন্তু চাহিদার কথা মাথায় রেখে স্টলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৩টি। মেলাটি দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে অন্য দেশের কবি সাহিত্যিকদের মিলনমেলায় পরিণত হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
মেলায় ঢাকা থেকে যোগ দিচ্ছে ৩০টি প্রসিদ্ধ প্রকাশনা সংস্থা। প্রবাসে অবস্থানরত কবি সাহিত্যিকদের মানসম্মত বই যাচাই-বাছাই করে মেলায় উপস্থাপনের জন্য চেষ্টা করছেন আয়োজক কর্তৃপক্ষ।