প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে যুক্ত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। আইসিসির বার্ষিক পর্যালোচনা এবং বাছাই প্রক্রিয়া শেষে আইসিসি এলিট প্যানেলভুক্ত আম্পায়ার হিসেবে ঘোষণা করা হয় তাকে।
আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার ওয়াসিম খান, প্রাক্তন খেলোয়াড় সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, সাবেক আম্পায়ার টনি হিল এবং আইসিসির অফিসিয়াল নিয়োগ সম্পর্কিত পরামর্শক মাইক রাইলিকে নিয়ে গঠিত নির্বাচক প্যানেল শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সহ এলিট প্যানেলভুক্ত অন্যান্য অফিসিয়ালসদের তালিকা চূড়ান্ত করেন।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আম্পায়ারিংয়ের অভিজ্ঞতায় আইসিসি পুরুষ ও মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপসহ অসংখ্য আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করেছেন সৈকত। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে মিরপুরে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা শুরু করেন এই আম্পায়ার।
ছেলেদের ম্যাচে অনফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে ১০টি টেস্ট, ৬৩ ওয়ানডে আর ৪৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দায়িত্ব পালন করেছেন সৈকত। নারী ক্রিকেটেও অনফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে হয়েছে ১৩ ওয়ানডে এবং ২৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ পরিচালনার অভিজ্ঞতা।
দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স এবং ক্রিকেটের প্রতি নিবেদনের ফলস্বরূপ আইসিসির অভিজাত প্যানেলে তাঁর আজকের এই অন্তর্ভুক্তি। আইসিসির প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালার্ডিস শরফুদ্দৌলাকে তার কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘আমি শরফুদ্দৌলাকে অভিনন্দন জানাতে চাই আম্পায়ারদের আইসিসি এলিট প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এবং এই প্যানেলে নির্বাচিত হওয়া বাংলাদেশের প্রথম আম্পায়ার হওয়ার কৃতিত্ব স্বীকার করতে চাই। আন্তর্জাতিক ম্যাচ এবং আইসিসি টুর্নামেন্টে বহু বছর ধরে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের জন্য এটি তার প্রাপ্য পুরস্কার।’
আইসিসির এলিট প্যানেলে সুযোগ পাওয়ায় উৎফুল্ল সৈকত বলেন, ‘আইসিসি এলিট প্যানেলে নাম লেখানো খুবই সম্মানের। আমার দেশ থেকে প্রথম হিসেবে প্যানেলে জায়গা করে নেওয়া আরও বেশি স্পেশাল। আমার প্রতি যে আস্থা দেখানো হয়েছে, তা প্রমাণ করতে মুখিয়ে আছি। আমি বছরের পর বছর ধরে মোটামুটি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং আরও চ্যালেঞ্জিং অ্যাসাইনমেন্টের জন্য প্রস্তুত। আইসিসি এবং বিসিবিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাকে এবং আমার অন্যান্য সহকর্মীদের সাহায্য এবং নির্দেশনা দিয়ে সমর্থন জানানোয়। আমার পাশে দাঁড়ানো এবং সমর্থন করার জন্য আমি আমার পরিবার এবং বন্ধুদেরও ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
ম্যাচ রেফারিদের আইসিসি এলিট প্যানেলে আনা হয়েছে একটি পরিবর্তন, ম্যাচ রেফারিদের সংখ্যা সাত থেকে কমিয়ে ছয় করা হয়েছে। এবারের এলিট প্যানেল থেকে বাদ পড়েছেন সাবেক ইংলিশ ওপেনার ক্রিস ব্রড। টানা দুই দশক আইসিসির এলিট প্যানেলে থাকা ব্রড ছেলেদের ১২৩ টেস্ট, ৩৬১ এবং ১৩৫টি টি-টোয়েন্টি ছাড়াও পরিচালনা করেছেন নারীদের ১৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ছেলেদের চারটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং দুটি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অংশ ছিলেন ক্রিস ব্রড।
আইসিসির এলিট প্যানেল আম্পায়ার:
কুমার ধর্মসেনা (শ্রীলঙ্কা), ক্রিস্টোফার গ্যাফানি (নিউজিল্যান্ড), মাইকেল গফ (ইংল্যান্ড), আদ্রিয়ান হোল্ডস্টক (দক্ষিণ আফ্রিকা), রিচার্ড ইলিংওর্থ (ইংল্যান্ড), রিচার্ড কেটেলবরো (ইংল্যান্ড), নিতিন মেনন (ভারত), আহসান রাজা (পাকিস্তান), পল রাইফেল (অস্ট্রেলিয়া), শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ (বাংলাদেশ), রডনি টাকার (অস্ট্রেলিয়া) ও জোয়েল উইলসন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।
আইসিসি এলিট প্যানেল ম্যাচ রেফারি:
ডেভিড বুন (অস্ট্রেলিয়া), জেফ ক্রো (নিউজিল্যান্ড), রঞ্জন মাদুগালে (শ্রীলঙ্কা), অ্যান্ড্রু পাইক্রফট (জিম্বাবুয়ে), রিচি রিচার্ডসন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), জাভাগাল শ্রীনাথ (ভারত)।